সংঘাত-প্রাণহানি নিয়ে কী বলছে বিশ্ব গণমাধ্যম

সংগৃহীত ছবি

সংঘাত-প্রাণহানি নিয়ে কী বলছে বিশ্ব গণমাধ্যম

অনলাইন ডেস্ক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিন গতকাল রোববার সংঘাত–সংঘর্ষ ও মৃত্যুর খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি ও এনডিটিভিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে নজিরবিহীন সহিংসতার কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশে রোববার (৪ আগস্ট) অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করায় অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জের একটি থানায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যার কথাও উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ দমন করতে সারা দেশে আবারও কারফিউ কার্যকর করেছে। গত মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হলেও এখন তা সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘পুরো রাজধানী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী একটি হাসপাতালের বাইরে গাড়ি ও মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে। ’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এ বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শিরোনাম ছিল, ‘বিক্ষোভে কয়েক ডজন মৃত্যুর পর বাংলাদেশে আবার কারফিউ জারি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন মারা গেছে। আবার কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেটে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নতুন করে সহিংসতায় ১৩ জন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৯১ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং স্টান গ্রেনেড ছুড়ে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করেছে। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার রাজধানী ঢাকা এবং উত্তরাঞ্চলের জেলা বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও রংপুরের পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলীয় মাগুরা, পূর্বের কুমিল্লা এবং দক্ষিণের বরিশাল ও ফেনীতে মৃত্যুর খবর দিয়েছেন পুলিশ ও চিকিৎসকরা। এর আগে জুলাই মাসে বিক্ষোভে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় সংবাদধ্যমটি।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে রোববার সংঘর্ষে ১৩ পুলিশসহ অন্তত ৯১ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ইতিহাসে একদিনে সবেচেয়ে বেশি প্রাণহানি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে চলমান আন্দোলন দমনে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ এনেছেন তার সমালোচনাকারী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে এ অভিযোগ শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা অস্বীকার করেছেন।

মার্কিন বার্তাসংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার বাংলাদেশে নতুন করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে প্রায় ১০০ জন নিহত  ও কয়েকশ’ লোক আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ভারতের প্রায় সব গণমাধ্যমে বাংলাদেশের অসহযোগ আন্দোলনের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দুস্তান টাইমস–এর সংবাদ শিরোনাম ছিল ‘সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আবার শুরু হওয়া বিক্ষোভে ৭২ জন নিহত’। স্ক্রল ডটইনের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের রাস্তায় লাখো মানুষ, নিহত ৭২’।

ভারতের এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ৯১ জন নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলেছে ঢাকায় দেশটির দূতাবাস।

news24bd.tv/DHL