দেশে দেড় হাজার ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙচুরের পেছনে কারা?

ফাইল ছবি

দেশে দেড় হাজার ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙচুরের পেছনে কারা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় দেড় হাজার ভাস্কর্য ,ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুরের ওপর হামলা করা হয়েছে। এগুলোর কোনোটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হাতুড়ির আঘাতে ভাঙা হয়েছে। বেশিরভাগই মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা–ভাঙ্চুরের সময় ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে দুটি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। রাজধানীর পলাশীর মোড়ে ছিল ভাস্কর শামীম শিকদারের ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম’ ভাস্কর্যটি। এখানে ছোট-বড় একশোর ওপরে পৃথক ভাস্কর্য ছিল। সবই ভাঙা হয়েছে।

শিশু একাডেমি চত্বরের ‘দুরন্ত’ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজয় সরণিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুঞ্জয়’ ভাস্কর্য গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে স্থাপিত থেমিসের ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে দুই পর্বে। ৭ আগস্ট উপড়ে ফেলা হয় এটি।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে যেমন, ময়মনসিংহের শশীলজের ভেনাসের মূর্তি, মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সসহ সেখানকার পাঁচ শতাধিক পৃথক ভাস্কর্য , নরসংদীতে ‘তর্জনী’ গাজীপরে সাত বীরশ্রেষ্ঠের রিলিফ ভাস্কর্যসহ বিভিন্নস্থানে ভাস্কর্য ভাঙা হয়।

গণবুদ্ধিজীবি সলিমুল্লাহ খান ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা করাই সঠিক নয়। এ সুযোগে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা অনেক কিছুই করতে পারে।

সাবেক সরকারি ও বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তা জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করা হলেও সেসময় বাড়িঘর, স্থাপনায় হামলা হয়নি। দল–মতনির্বিশেষে বাঙালি দ্বারা অর্জিত আমাদের স্বাধীনতাকে শেখ হাসিনা দলের একক অর্জন হিসেবে গুলিয়ে ফেলেছিলেন। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সবাই। একটি গোটা জাতির অর্জনকে আপনি নিজের বলে অপব্যবহার করতে পারেন না। ১৯৭৫ ও ২০২৪ সালে মানুষ এই বার্তাই দিতে চেয়েছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে , এসব হামলা-ভাংচুর তাদের মুল আদর্শিক স্পিরিটের সাথে যায় না। তার ফ্যাস্টি হঠিয়েছে । নিজেরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী। একটি দুবৃত্ত চক্র একাজ গুলো করেছে। এদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আমলা বলেছেন, এসব ভাস্কর্য ,ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভে হামলা-ভাংচুর করা ঠিক হয়নি। তবে এগুলো আওয়ামী লীগ দলের সম্পত্তি মনে করতো। জাতির না। আওয়ামী লীগের এই মানসিকতাও ন্যাক্কারজনক। আওয়ামী লীগই মানুষের প্রতি এই বার্তা তৈরিতে সাহায্য করেছিল যে এগুলো জাতীয় নয়, তাদের দলের সম্পদ।  

news24bd.tv/ডিডি