নজরুল স্মৃতি

গুলজার হোসেন উজ্জ্বল

নজরুল স্মৃতি

গুলজার হোসেন উজ্জ্বল

আমার ছেলেবেলাটা কেটেছে নজরুল ঘোরে। নিজের ভেতরে কবিকে অনুভব করতাম। তাঁর মতো করে কবিতা লিখতে চাইতাম, গান লিখতে ও গাইতে চাইতাম। এসবের পেছনে দায়ী ছিলেন মূলত আমার আব্বা।

উনি একজন আপাদমস্তক নজরুল ভক্ত ছিলেন। খুব মনে পড়ে, নজরুলের চাচা বজলে করিমের মতো করে আব্বা আমাকে বলতেন আমার ব্যাঙাচি বড় হলে সাপ হবে। আব্বা এমনই ছিলেন। পুত্রের সামান্য প্রতিভায় বিগলিত হয়ে যেতেন।
একটা হাবিজাবি কবিতা লিখলেও বলতেন কী অসাধারণ কীভাবে লিখলি এটা এরপরই আব্বা লাইব্রেরি থেকে কোনো একটা বই কিনে আনতেন।
স্কুলে থাকতেই আব্বা আমাকে বিদ্রোহী কবিতা প্রায় মুখস্থ করিয়ে ছেড়েছিলেন। আব্বা রবীন্দ্রনাথেরও ভক্ত ছিলেন। সেটা হয়তো রবীন্দ্রনাথের প্রতিভার প্রতি ভক্তি।  কিন্তু নজরুলের প্রতি তিনি ইশক অনুভব করতেন। কবি, শিল্পী ও মানুষ নজরুলের প্রতিটি সত্ত্বা মিলিতভাবে এক অভিন্ন প্রীতি জাগানিয়া হয়ে তার ভেতর ঢুকে গিয়েছিল। সম্ভবত একই ব্যাপার ঘটেছে আমার মধ্যেও। তারপর সমাজ, পরিবেশ ও প্রতিবেশের কারণে নানারকম পরিচয় ধারণ করেছি। কিন্তু অন্তরে বাহিরে কোথাও এখনো অনুভব হয় যে একজন নজরুল আমাকে প্রভাবিত করেন।
আমাকে তাড়িত, অনুরণিত করেন। নজরুলের চোখ দিয়ে মানুষকে দেখা শিখেছি, জীবনকে দেখা শিখেছি। এই শিক্ষাটুকুর জন্য কবির কাছে আমার আজন্ম ঋণ। আজ আমার দুখু মিয়ার জন্মদিন। এক চির দুখী,  চির আনন্দময় মানুষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম হৃদয়ের কথামালা দিয়ে।

লেখক: চিকিৎসক

news24bd.tv/ডিডি