রায়েরবাগ-শনির আখড়ায় পুলিশ হত্যা, ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬

রায়েরবাগ-শনির আখড়ায় পুলিশ হত্যা, ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাগ, শনিরআখড়া এলাকায় নাশকতা ও দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তার হওয়া অন্য পাঁচজন হলেন- ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেক। তারা মাসুদের নেতৃত্বে নাশকতা ও হত্যা মিশনে অংশ নেয় জানায় ডিবি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ঢাকার মিন্টোরোডে একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। তারা বেছে বেছে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে, উদ্দেশ্য ছিল পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়া।

তিনি এই হামলা ও নাশকতার জন্য বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের দায়ী করে বলেন, “বিএনপি-জামায়াত অনেকবারই গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সম্মুখযোদ্ধা পুলিশের কারণে তারা বারবারই ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি এই সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, “পুলিশ সদস্যদের শুধু পিটিয়ে মারা বা হত্যা করাই নয়, বাসা-বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করে পুলিশ সদস্যদের খোঁজা হয়েছে। এখন আমরাও বাসা-বাড়িতে জামায়াত-শিবির-বিএনপি চক্রকে খুঁজছি। যেখানেই পাব গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসব। ”

ডিবি হারুন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ডেমরা থানার ছাত্রদল নেতা মাসুদ রানার নেতৃত্বে একটি দল সেখানে নাশকতার পরিকল্পনা করে। মাসুদের নেতৃত্বে ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেকসহ ২৫-৩০ জনের একটি দল ছিল। যারা গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পরিকল্পিতভাবে ঢুকে পড়ার জন্য রায়েরবাগে অবস্থান নেয়।

ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসআই মোহাম্মদ মুক্তাদির ও ডিএমপির নায়েক গিয়াস উদ্দিনকে হত্যায় ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে এই গ্রুপটির ভূমিকা ছিল এমন অভিযোগ তুলে ডিবি হারুন বলেন, মাসুদ রানা রায়েরবাগ ও শনির আখড়া এলাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করে।

হামলায় তারা কে কোন দায়িত্বে ছিলেন, তার বর্ণনায় হারুন বলেন, ইরফান ও মাসুদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ পুলিশ সদস্যদের হত্যা ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। আবু বক্কর পুলিশ সদস্যকে মারপিট করে এবং মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। রবিউল হকিস্টিক দিয়ে পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে এবং মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগে সহায়তা করে। সৌরভ মিয়া বাঁশের লাঠি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে। তারেক লাঠি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে এবং মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগে সহায়তা করে।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ১৫ জুলাই সহিংসতা শুরু হয়। পরের দিনগুলোতে তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। ১৮ জুন থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠে যাত্রাবাড়ী সংলগ্ন শনির আখড়া ও রায়েরবাগ। আন্দোলনের মধ্যে পুড়িয়ে দেওয়া হয় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা। সহিংস আন্দোলনের কয়েকটি দিন ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। হতাহত হন অনেকে।

news24bd.tv/জেপি বর্মা/SC