ভ্রমণকরের বিনিময়ে কী পাই

তারেক অণু

ভ্রমণকরের বিনিময়ে কী পাই

তারেক অণু

প্রতিবার বাংলাদেশের বাহিরে যেতে ১০০০ টাকা ভ্রমণকর (Travel Tax) দিতে হয়, দেশি-বিদেশী সবাইকে, আগে ৫০০ টাকা ছিল। স্থলপথে (বাস/ট্রেনে) গেলে সেই ট্যাক্স ব্যাংক থেকে করায়ে নিয়ে যেতে হয়, সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইনে করা যায় আর বিমানপথে গেলে টিকেটের দামের সাথে তা যোগ করা থাকে।  
সব দেশেই যে ভ্রমণকর দিতে হয় তা কিন্তু না যেমন ভারতেই দিতে হয় না, নেপালেও না- এমন দেশের তালিকা অনেক দীর্ঘ।  
বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ১৫ হাজার লোক বা বেশী অন্য দেশে যায়, ১০০০ টাকা করে ভ্রমণকর থেকে এই খাতে কী বিপুল পরিমাণ টাকা (বছরে ৩৬৫ দিনই) জমা হচ্ছে তা বুঝতেই পারছেন, বছরে ৫৫০ কোটি টাকা, কমপক্ষে।


আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই ভ্রমণকর দেবার পরিবর্তে আমরা কী কী সুবিধা পাচ্ছি? কর তো দিতেই হবে, এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেই করের টাকার সঠিক ব্যবহার করা এবং করদাতাদের সেবা নিশ্চিত করা।  
গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি ২/১টা ছাড়া দেশের অধিকাংশ স্থলবন্দরে কোন রকম দ্রুত সেবার দেবার ব্যবস্থা নেই, যেমন আপনি পাসপোর্ট জমা দিলেন, যেহেতু সেটা মেশিন রিডেবল, তাই মেশিনে দ্রুত সেটা যাচাই করা যেতেই পারে- কিন্তু আপনাকে ৩ জায়গায় (ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, বিজিবি- এই তিন জায়গায়ই) আবার হাতে নিজের নাম, ঠিকানা, যাবতীয় তথ্য লিখতে হবে, বা সেখানে কর্তব্যরত ব্যক্তিরা লিখবেন এবং আপনি সাক্ষর করবেন, এবং এখানে যাবে একগাদা সময়! এবং হয়রানির শিকার তো হবেনই চা খাবার জন্য পদে পদে টাকা দিতে দিতে।  
অথচ আমার ধারণা আমাদের জনগণের একদিনের দেওয়া ভ্রমণকর দিয়েই দেশের প্রায় সবগুলো সীমান্তে স্ক্যানার মেশিন সবখানেই দেওয়া যেতে পারে!
আর একই মানুষের একই তথ্য তিন জায়গায় কেন লিখতে হবে? এটা তো প্রাগৈতিহাসিক কালের কথা! যেকোনো এক জায়গায় স্ক্যান করে পাসপোর্ট ঠিক থাকলে যেতে দেবে, ব্যস! পাসপোর্ট এর সমস্যা থাকলে যেতে দিবেনা! 
এই বিপুল জনগোষ্ঠীর ১০০০ টাকা করে ভ্রমণকর থেকেও এই সেবাটুকুও নিশ্চিত করা যায় না প্রতিটি স্থল বন্দরে??
আর যদি তা না যায় তাহলে এই টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে ?

লেখক: পাখি ও প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করেন।  

news24bd.tv/ডিডি