রাত পোহালেই উপজেলায় ভোট, প্রস্তুতি সম্পন্ন

মঙ্গলবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয় সরঞ্জাম

রাত পোহালেই উপজেলায় ভোট, প্রস্তুতি সম্পন্ন

অনলাইন ডেস্ক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হচ্ছে আজ বুধবার (৮ মে)। এদিন প্রথম ধাপে দেশের ১৩৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ভোটগ্রহণের সরঞ্জাম। নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা প্রস্তুতি।

এই ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। এই ধাপে মোট এক হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন।

প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ মোট ২৮ জন প্রার্থী ইতোমধ্যে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।  

হাতিয়া, মুন্সিগঞ্জ সদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর এই পাঁচটি উপজেলার সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ এই পাঁচ উপজেলায় কোনো পদেই ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। এছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। এই ধাপে ১৪১টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এবং জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেছে।

জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনও ঘোষণা দিয়ে বর্জন করেছে বিএনপিসহ বিরোধী কয়েকটি দল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ মাত্র চারটি দল দলীয়ভাবে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এতে নির্বাচন অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ হারিয়েছে।

বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করলেও দলটির অনেক নেতা ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। বিএনপি তাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে। এবারের নির্বাচনে বেশিরভাগ প্রার্থীই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। দলীয়  প্রতীক নৌকা না রাখায় দলটির অনেক নেতা নির্বাচন করছেন। এতে নিজেদের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।  

এদিকে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে স্বাভাবিক এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া বিশেষ এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন। উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।  ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুই দিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন।

আজ রাত ১২টা থেকে বুধবার অর্থাৎ ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

ভোটগ্রহণের সাত দিন আগে ও ভোটগ্রহণের পরবর্তী সাত দিন পর্যন্ত লাইসেন্সধারীরা অস্ত্রসহ চলাচল না করতে কিংবা বহন ও প্রদর্শন না করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করেছে।  

তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণের তিন দিন পূর্ব পর্যন্ত আচরণ বিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষ ও প্রতিরোধে প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভোট গ্রহণের তিন দিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া ভোট গ্রহণের দুই দিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের দুই দিন পর পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট কক্ষে তিন কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ এক কোটি ৬০ লাখ দুই হাজার ২২৪, নারী এক কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

news24bd.tv/aa