লাল সোয়েটার
মাঘ মাসের নিদারুণ শীতে যখন ঠোঁট হাত গাল ফ্যাকাসে হয়ে ওঠে
বুবুর পুরান সোয়েটারে কিছুতেই কাঁপুনি থামেনা।
আম্মা তাড়াতাড়ি নিজের শরীর থেকে খুলে ছাই রঙের জীর্ন জাম্পার খানা আমার গায়ে জড়ান।
প্রতিবছর আব্বাকে বলেন এবার কিছু উল কিনতে হবে পুরান সোয়েটার পরে মেয়েটা স্কুলে যেতে চায় না। আব্বা শুধু হুঁ আর হুঁ বলেন।
পাশের বাসার নিম্মির অনেক গুলো সোয়েটার, সাদা, গোলাপি, কমলা আর নীলের ময়ূর পুচ্ছ সোয়েটার। ওকে মাঝে মাঝে সত্যিকার ময়ূর মনে হয়! তখন লুকিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে বেঞ্চের তলায়।
এক চৈত্র মাসে অফিস ফেরত আব্বা উল আনলেন। যদিও পুরান মার্কেটের উল।
নরম লাল বল, হাতের মুঠে নিলে মিইয়ে যায়, আমার হৃদয়ে ছলকে ওঠে লাল।
সাত নাম্বার কাঁটা দিয়ে আম্মা রোজ ঘর গুনে গুনে উল বুনান
উলটা তিন ঘর, সোজা দুই ঘর
কাঁধে ফেলে মাপ নেন।
মন খুশিতে নেচে ওঠে এবার শীতে আমারও হবে একটা লাল সোয়েটার।
স্পর্শ
স্পর্শ জনিত ফায়ার ক্যাম্প বহন করে চলেছ ঠোঁটে
চোখ মনে করতে চাইলেও দেখি ঠোঁট।
লিপগ্লস দিয়ে ফের মুছে ফেলি
আধুনিক কিস মেকার প্রস্তুত
শুধু ঠোঁট ছুঁয়ে দিলে কী কী সব হয়!
উষ্ণতা, উজান হয়তো তোমার জানা।
আগুন কিভাবে বহন করতে হয় চোখের তারায়, প্রেমের পাশে, নিশ্বাসে
বিনিময় হয় উত্তর আর দক্ষিণ মেরু
দলিল দস্তাবেজ ভাঁজ করা থাকে নিরাপদ ভল্টে ;
সমস্ত পৃথিবী মত্ত হাজারো যুক্তি আর কুযুক্তির যুদ্ধে, আমি শুধু বসে থাকতে চাই যুদ্ধহীন প্রেমের আঙুলের কড়ে, কানের পাশে লেগে থাকা আকাশে
থুতনি ছুঁয়ে যাওয়া ভেজা বাতাসে।
দৃষ্টি
দগ্ধ দুপুর শীতল হয় শুধু একবার এমুখে চাইলে
চোখের ভেতর তুষার আহ্বান জানায়
এমন চোখ আগে কি দেখেছি?
বহু চোখ দেখেছি রঙধনু রঙে
রক্ত আবীরে, শ্বেত মৃতপ্রায়,
কতো চোখে আমি রেখেছি চোখ,
আগুন দেখেছি চোখে
ভীষণ ভষ্ম করার ক্ষমতা থাকে কারো!
কেউ কেউ বুকের ভেতর টা জ্বালিয়ে দিতে পারে!
কেউ সেই জ্বলনে শান্তি প্রলেপ দেয় অন্তরে।
চোখের দারুণ প্রভাবে
ভূমিকম্পে প্রকম্পিত হয়েছে কত প্রান্তর
ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি হয়ে ঝলকে দিয়েছে মরণকাল।
আবার চোখেই নেমে এসেছে
মেঘের ছায়া,
ডেকেছে বান,
কুল ছাপিয়ে হৃদয় গাঙে
ছলকে উঠেছে কত সুর আর গান।
কত কবি প্রেমিক হয়ে যেচেছে
ঐ চোখের মায়াবী শক্তি
কত প্রেমিক হয়ে উঠেছে কবি।
কত নারী চোখেচোখ রেখে অন্ধ হয়েছে
পুরুষেরা ভুগেছে দ্বন্দ্বে।
আমি সেই চোখ দেখেছি,
আর দেখিনি, দেখবোনা
একবার যে পায় ঐ দৃষ্টি সে কি আর কিছু চায়
news24bd.tv/ডিডি