জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

অনলাইন ডেস্ক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লাকে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটজন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।  

বহিষ্কৃত আট শিক্ষার্থী হলেন- সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের মো. রাজন মিয়া ও একই বিভাগরে ৪৫ ব্যাচের রাজু আহাম্মদ, ইতিহাস বিভাগের ৪৪ ব্যাচের জুবায়ের আহমেদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের সোহাগ মিয়া, ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের হামিদুল্লাহ সালমান ও একই বিভাগের ৫০ ব্যাচের মাহমুদুল হাসান রায়হান, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯ ব্যাচের আহসান লাবিব ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আতিকুজ্জামান আতিক।

 

জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, শামীম মোল্লাকে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত এবং ভিডিও ফুটেজ ও ছবি চেক করে ৮ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।  

উপাচার্য আরও বলেন, এছাড়াও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেনকে সভাপতি করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটক সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিলেন শামীম মোল্লা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। ভিডিও ফুটেজে লাঠি হাতে শামীমকে মারতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিবকে। এছাড়া লাথি দিতে দেখা গেছে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিককে।  

গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা তাকে আরেক দফা গণপিটুনি দেয়। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ থেকে প্রাথমিকভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়। তারা হলেন- সাঈদ হোসেন ভুঁইয়া, রাজু আহমেদ, রাজন হাসান, হামিদুল্লাহ সালমান এবং এম এন সোহাগ।

ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিরাপত্তা কার্যালয়ের ভেতরে চেক শার্ট পরিহিত অবস্থায় শামীমকে পেটাচ্ছেন রাজু আহমেদ। এ সময় তার হাতে গাছের ডাল দেখা গেছে। এছাড়া রাজন হাসানের গায়ে হাফ হাতা লাল রংয়ের শার্ট দেখা গেছে। হামিদুল্লাহ সালমানের গায়ে হাফ হাতা শার্ট ও সোহাগের গায়ে সাদা টি শার্ট ও চশমা দেখা গেছে।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত অবস্থায় শামীমকে মারধর করছেন সাঈদ হোসেন ভুঁইয়া। তবে তারা প্রত্যেকেই মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

নিহত শামীম সাভারের আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার মোল্লা বাড়ির ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯ ব্যাচ) ইতিহাসের বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।  

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক