কালজয়ী কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিমতলা মহাশ্মশানে নেওয়ার পর তার শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
শেষকৃত্যের সময়ে উপস্থিত ছিলেন কোলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের ডেপুটি হাই-কমিশনার ও সাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের পুত্র আন্দালিব ইলিয়াস, প্রথম সচিব প্রেস রঞ্জন সেন, কলকাতার মহা নাগরিক মেয়র ও পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য, প্রদেশ কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল, বামফ্রন্ট সেক্রেটারি বিমান বসু, সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম,পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।
সোমবার (৮ মে) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কোলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিলো এই সাহিত্যিককে। এরপর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে।
সমরেশ মজুমদার ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে। তিনি কোলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেন কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।
অনেক অসাধারণ লেখনীর শব্দের এই রূপকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইয়াইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন। চিত্রনাট্য লেখক হিসাবে জয় করেছেন বিএফজেএ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির এওয়ার্ড। সমরেশ কলকাতা ও বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা লেখক হিসাবে পাঠকমন জয় করেছেন।