‘সাবেক এমপির নির্দেশে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় ছাত্রদল নেতাকে’ 

‘সাবেক এমপির নির্দেশে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় ছাত্রদল নেতাকে’ 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফির নির্দেশে ছাত্রদল নেতা সুজন সরকার ও তার দুই ভাইকে থানায় ডেকে নিয়ে আটকে রেখে চাঁদা দাবি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠনো হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রদল নেতা সুজন সরকারের ডান চোখে ধারালো ছুরি দিয়ে গুরুতর জখম করে বলেও অভিযোগ করা হয়।

সোমবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন উল্লাপাড়া পৌর এলাকার ঝিকিড়া সাহা পাড়া মহল্লার সুমন সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে সুমন সরকার বলেন, আমার ছোট ভাই সুজন সরকার জাতীয়বাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত।

সে উল্লাপাড়া পৌর ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী। এ কারণে উল্লাপাড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম লেবু, ঝিকিড়া মহল্লার আওয়ামীলীগ কর্মী রেকোয়াত হোসেন রকেট ও সোয়েব আলী আমার ভাইকে নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ কর্মী রেকোয়াত হোসেন রকেট ও সোয়েব আলীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বাড়িতে হামলা করে। হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার বাবা সবুজ সরকার গুরুতর আহত হন।
 

তিনি বলেন, এ সময় আমার বাবাকে রক্ষা করতে এলে তারা আমার ছোট ভাই সুজন সরকারকে ধারালো ছুরি দিয়ে চোখে গুরুতর জখম করে। এছাড়া আমাদের বসত বাড়িতে হামলা করে ২ লাখ টাকা ক্ষতি সাধন করে এবং তিন ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় আমি (সুমন সরকার) বাদি হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে উল্লাপাড়া আমলী আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটির তদন্ত শেষে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে গত ৯ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এর পর থেকে আসামিরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। উল্লাপাড়া আসনের তৎকালীন

সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি ও উল্লাপাড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম লেবুর নির্দেশে উল্লাপাড়া থানার ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম ও এসআই গোলজার হোসেন মামলার মীমাংসার কথা বলে আমাকে ও আমার দুই ভাই সুজন সরকার ও সংগ্রাম সরকারকে উল্লাপাড়া মডেল থানায় নিয়ে যায়। থানায় আমাদের আটকে রেখে মামলা প্রত্যাহরের জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং আমাদের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আমাদের থানায় আটকে রাখা হয়। পরে একটি মিথ্যা মামলায় আমাদের তিন ভাইকে আসামি করে আদালতে পাঠানো হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সুজন সরকার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে পরীক্ষা দিয়েছিল। সে রিটেন পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছে। ভাইভা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করে ধারালো ছুরি দিয়ে তার ডান পাশের চোখে ঘা মেরে চোখ তুলি ফেলার কারণে এসআইয়ের চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক থাকার কারণে আমার আরেক ছোট ভাই সংগ্রাম সরকার এইচএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনি। পুরো বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম প্রভাব বিস্তার করায় আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি। এ বিষয়ে আমরা মামলা দায়ের করার উদ্যেগ নিয়েছি। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুমন সরকারের বাবা সবুজ সরকার, দুই ভাই সুজন সরকার ও সংগ্রাম সরকার।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক