২০টি গরুকে চুরির হাত থেকে বাঁচিয়ে এলাকার হিরো 'বুলেট'

বুলেটের বাঁধার মুখে গরু চুরি না করতে পেরে চোরেরা গুরুতর জখম করে বুলেটকে

২০টি গরুকে চুরির হাত থেকে বাঁচিয়ে এলাকার হিরো 'বুলেট'

অনলাইন ডেস্ক

কুকুরের প্রভুভক্তির নজির আজ নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নজির সৃষ্টি করে প্রভুভক্তির অসংখ্য উদাহরণ রেখেছে কুকুর।  

এবার গাজীপুরে 'বুলেট' নামের এক কুকুর এক খামারের ২০টি গরুকে চুরির হাত থেকে রক্ষা করলো। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যখন বিভিন্ন খামারে গরু চুরির ঘটনা বেড়ে যায়।

গত ৬ জুন রাতে গাজীপুর সদরের জামতলা এলাকায় গরু চোরের একটি দল প্রবেশ করে। এর আগের দিনই জামতলার পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে ১২টি গরু চুরি হওয়ার খবর পাওয়া যায়। জামতলা এলাকার খামারটিতে যখন চোরের দল প্রবেশ করে তখন এলাকা পাহারাতে ছিল 'বুলেট' নামে এক প্রহরী কুকুর।

জানা যায়, স্থানীয় সাজ্জাদ হোসেন নামে এক মুদি দোকানি বুলেটকে পালন করেন।

সাজ্জাদের পাশের বাড়ির খামারে আছে ২০টি গরু। মাঝেমধ্যে বুলেটকে ওই খামারের খামারি খাবার দেন।

এদিকে গরু চোরেরা ওই গোয়ালে ঢুকলে বিষয়টি টের পেয়ে যায় বুলেট। তৎক্ষনাৎ বুলেটের চেঁচামেচি ও আক্রমণাত্মক আচরণের কারণে সে সময় চোরেরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। সব চোর পালিয়ে যাওয়ার আগে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে বুলেটকে। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানে পরে থাকে বুলেট। বুলেটের পুরো শরীর জখম হয় মারাত্মকভাবে, দুই ভাগ হয়ে যায় নাক।

এ অবস্থায় রোববার (৯ জুন) দুপুরে বুলেটকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুর সদরের পেট অ্যানিমেল ক্লিনিক পেট পয়েন্টে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ডাক্তারদের অক্লান্ত চেষ্টায় বুলেটের শরীরের ৭টি স্থানে মোট ৩৭টা সেলাই দেয়া হয় এবং জোড়া লাগানো হয় দুই ভাগ হয়ে যাওয়া নাক। সার্জারি শেষে চিকিৎসা দিয়ে বুলেটকে পাঠানো হয় বাড়ি।

এর ঠিক পরদিন পেট পয়েন্ট গাজীপুরের ডা. মো. মোহাইমিনুল হক পদ্ম ও ডা. মো. তাছমীর রাইয়ান লাবিব তাদের টিমের সদস্য রাকিবুল রায়হান, মো. আসাদুজ্জামান সজল, ইমন রহমান ও তানভীর মাহতাব তারিফসহ যান বুলেটের অবস্থা পর্যবেক্ষণে।

সেসময় তারা জানান, বুলেট এখন কিছুটা দুর্বল হলেও অনেকটা সুস্থ। বিপদ কেটে গেলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কদিন সময় লাগবে। এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, বুলেটের এই সাহসিকতায় ওই রাতে জামতলা গ্রামের প্রায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার সম্পদ বেঁচে গেছে।

ওই এলাকার সবার কাছে বুলেট এখন হিরো, সবাই বুলেটের সুস্থতা কামনা করছেন।

পেট পয়েন্ট গাজীপুরের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও সার্জন ডা. মো. মোহাইমিনুল হক পদ্ম বলেন, বুলেটের শরীরের মোট ৭টি স্পটে আমরা খুব গভীর জখম পেয়েছি। খুবই ধারালো বস্তু দিয়ে ওকে আঘাত করা হয়েছে। এক কোপ খেয়েই পালায়নি বোঝা যায়, বারবার প্রতিহত করেছে সে। ওর জন্য মেজর সার্জারির প্রয়োজন হয়েছে।

news24bd.tv/SC