‘সম্পদের পাহাড়’ ছেড়ে কোথায় গেলেন লায়লা, বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা

লায়লা কানিজ লাকি

‘সম্পদের পাহাড়’ ছেড়ে কোথায় গেলেন লায়লা, বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক

লায়লা কানিজ।  ছাগলকাণ্ডে আলোচিত তরুণ মুশফিকুর রহমানের (ইফাত) বাবা রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী । তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। গুঞ্জন রয়েছে তিনি মালয়েশিয়ায় পালিয়েছেন।

তার নামেই মতিউর সম্পদের পাহাড় গড়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।  
উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের দুই দিন আগে সর্বশেষ অফিস করেছেন লায়লা কানিজ। ঈদের ছুটি শেষে এ পর্যন্ত একবারের জন্যও কার্যালয়ে আসেননি তিনি। তাদের ধারণা, তিনি ছাগলকাণ্ডে বেশ বিব্রত।
সাংবাদিকেরাও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেতে তার কার্যালয়ে এসে খোঁজাখুজি করছেন। গত রোববার উপজেলা প্রশাসন ভবনে মাসিক মিটিং ছিল। সেখানেও উপস্থিত হননি।  
এলাকার অনেকই বলছেন , তারা শুনেছেন , তিনি ছেলেকে নিয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়েছেন এমন খবর শুনেছেন। তবে সত্যতা  কেউই নিশ্চিত করেননি। এমনকি এখনও কেউ পরিস্কারভাবে বলতে পারছেন না লায়লা কোথায় আছেন। দেশের ভেতরেও আত্মগোপনে থাকতে পারেন। তবে মতিউর রহমান কোথায় রয়েছেন এটাও নিশ্চিত নন তার আগের অফিসের অনেকে। এনবিআরের একজন বলেছেন, তিনিও আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে রোববার দেশ ছেড়েছেন।  
রাজস্বের আলোচিত সেই মতিউর রহমান, তার স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।  
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ জুন) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

কারণ লায়লা  নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নিজের নামে ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, যশোর ও নাটোরে মোট ৮৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ (২৫ দশমিক ৭০ বিঘা) জমি থাকার কথা বলেছেন। ফ্ল্যাটের হিসাব দিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের এক ভবনেই চারটি ফ্ল্যাটের নম্বর উল্লেখ করেছেন। যার মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। যদিও ওই ভবনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে জানা গেছে, ভবনটির একেকটি তলায় চারটি করে অ্যাপার্টমেন্ট আছে। একেকটির আয়তন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট। নির্মাণের শুরু থেকে হস্তান্তর পর্যন্ত প্রতি বর্গফুট সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। সর্বনিম্ন ধরলেও এই চারটির দাম পড়ে অন্তত ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর বাইরে আরও একটি ফ্ল্যাট থাকার কথা হলফনামায় উল্লেখ থাকলেও ঠিকানা দেওয়া হয়নি। তবে সেটার মূল্য দেখানো হয় সাড়ে ৫৫ লাখ টাকা। তিনি একটি মৎস্য খামারের মালিক বলেও জানিয়েছেন।  
এছাড়া গাজীপুরের পূবাইলে আপন ভুবন নামে বিনোদন পার্ক ও পিকনিক স্পট থেকে শুরু করে রয়েছে বাণিজ্যিক এলাকায় কোটি কোটি টাকার জমি-প্লট রয়েছে লায়লার।   
২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর বিবরণীতে মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা কানিজ তাঁর মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ১০ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার টাকা। তাঁর হাতে এবং ব্যাংকে নগদ ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা আছে বলে উল্লেখ করেছেন। পুঁজিবাজারের শেয়ার বিক্রি থেকে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা মুনাফার কথাও উল্লেখ করেছেন।
লায়লা কানিজ লাকি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে ২০২২ সালে রাজনীতিতে এসেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হন তিনি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকও।

news24bd.tv/ডিডি