মুমিনের জীবনে আল্লাহভীতির প্রভাব

সংগৃহীত ছবি

মুমিনের জীবনে আল্লাহভীতির প্রভাব

অনলাইন ডেস্ক

তাকওয়া বা আল্লাহভীতি হলো অন্তরের এমন অনুভূতির নাম, যার ভিত্তিতে যেকোনো কাজ আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী করার গভীর আগ্রহ তৈরি হয় এবং আল্লাহর অবাধ্যতার ব্যাপারে ঘৃণা সৃষ্টি হয়। পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকে এমনই ধারণা পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘এটাই আল্লাহর বিধান এবং কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে সম্মান করলে এটা তার হৃদয়ের তাকওয়া সঞ্জাত। ’ (সুরা হজ, আয়াত: ৩২)

তাকওয়া আমলে প্রকাশ পায়: তাকওয়া দ্বারা যেমন অন্তরের অবস্থা বোঝায়, তেমন তাঁর বাহ্যিক প্রক্রিয়াকেও বোঝায়।

অবিশ্বাসীদের চূর্ণ-বিচূর্ণ করার ক্ষমতা এবং প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকার পরও সাহাবায়ে কেরাম হুদায়বিয়ার সন্ধি মেনে নিয়েছিলেন। আল্লাহ এই ঘটনাকে তাকওয়ার সৌন্দর্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন অবিশ্বাসীরা তাদের অন্তরে পোষণ করত গোত্রীয় অহমিকা—অজ্ঞতা যুগের অহমিকা, তখন আল্লাহ তাঁর রাসুল ও মুমিনদের স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন; আর তাদের তাকওয়ার বাক্যে সুদৃঢ় করলেন এবং তারাই ছিল তার অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন।

’ (সুরা ফাতহ, আয়াত: ২৬)

এ আয়াতে যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিহার, কাবা ঘরের প্রতি সম্মান এবং কুরাইশের মূর্খতাসুলভ আচরণ উপেক্ষা করাকে তাকওয়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা অঙ্গীকার পূরণ ও যথাসম্ভব যুদ্ধ পরিহারকারীদের আল্লাহভীরু আখ্যা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের সঙ্গে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পূর্ণ করবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকিদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ৪)

ভালো কাজের আগ্রহ বাড়ায় : পাপ কাজ, মন্দ শিক্ষা, মন্দ সংশ্রব যেভাবে মানুষের ভেতর মন্দ প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে, তেমনই আল্লাহভীতি মানুষের ভেতর ভালো কাজের আগ্রহ বৃদ্ধি করে।

আল্লাহ বলেন, ‘যারা সৎপথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং তাদের মুত্তাকি হওয়ার শক্তিদান করেন। ’ (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত: ১৭)

জীবনসংযত করে: তাকওয়া বা আল্লাহভীতি মুমিনের জীবনকে সংযত করে। এই সংযত জীবনের জন্য আল্লাহর কাছে আছে মহাপুরস্কার। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুরের সম্মুখে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরীক্ষা করে নিয়েছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। ’ (সুরা হুজরাত, আয়াত: ৩)

শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি: ইসলাম মানবসমাজ থেকে বংশ, বর্ণ, স্থান, সম্পদসহ সামাজিক মর্যাদার সব মাপকাঠিকে অস্বীকার করে শুধু একটি বিষয়কে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি হিসেবে উল্লেখ করেছে। তা হলো আল্লাহভীতি। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তোমাদের বিভিন্ন শ্রেণি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যেন তোমরা নিজেদের চিনতে পারো। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সেই আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত, যে সবচেয়ে বেশি আল্লাহভীরু। ’ (সুরা হুজরাত, আয়াত: ১৩)

আল্লাহ সবাইকে তাকওয়ার জীবন দান করুন। আমিন

লেখক: মো. আবদুল মজিদ মোল্লা

news24bd.tv/DHL