পুলিশদের নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বিপিএসএ'র

সংগৃহীত ছবি

পুলিশদের নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বিপিএসএ'র

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত-প্রচারিত সংবাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ)।

শুক্রবার (২১ জুন) বিপিএসএ সভাপতি ও এসবির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এবং সাধারণ সম্পাদক ও পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ জেলা গোলাম মোস্তফা রাসেল পিপিএম (বার)-এর সই করা বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত-প্রচারিত অতিরঞ্জিত রিপোর্ট সম্পর্কে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ ধরনের আংশিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঢালাওভাবে প্রকাশিত-প্রচারিত অতিরঞ্জিত প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বাংলাদেশ পুলিশ শুধু দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়; যে কোনো মানবসৃষ্ট কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবার হাত বাড়িয়ে দিতে কখনো পিছপা হয়নি। করোনা অতিমারিকালে বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় সদস্যগণ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে, জীবনের মায়া তুচ্ছ করে জনগণের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধে উজ্জীবিত হয়ে সেবার মানসিকতা নিয়ে মানবিক পুলিশ হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।

পুলিশ কোয়ারেন্টাইন, লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত মানুষকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছে, শুধু তাই নয়, মানুষের বাসায় ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দিয়েছে। মানবতার চরম বিপর্যয়ের সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে যখন লাশ ফেলে প্রিয়জনরা চলে গেছে, তখন লাশের দাফন/সৎকারের ব্যবস্থা করেছে।

করোনাকালে জনগণের সেবায় ১০৬ জন পুলিশ সদস্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। তবুও পুলিশ সদস্যরা জনগণকে সেবা দেয়া থেকে পিছপা হননি, তারা নিজের দায়িত্ববোধে ছিলেন অবিচল। করোনাকালে বাংলাদেশ পুলিশ সেবার যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা অত্যন্ত বিরল।

স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী চক্র কর্তৃক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড যেমন: ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি ও পেট্রোল বোমাবাজদের প্রতিহত করার ক্ষেত্রে পুলিশের সফলতার কারণে উক্ত গোষ্ঠী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে প্রতিপক্ষ বিবেচনায় প্রতিনিয়তই পুলিশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সমালোচনায় লিপ্ত।

অভিযোগ করা হয়, স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী চক্র তাদের দোসর বিদেশে পলাতক সাইবার সন্ত্রাসী কর্তৃক ধারাবাহিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত তথ্য প্রকাশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের চরিত্র হননে ব্যস্ত। তাদেরই অনুকরণে ইদানীং কোনো কোনো গণমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ও সাবেক সদস্য সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানহানিকর নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করছে, যা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্য বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ ধরনের রিপোর্টের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ নেই। তথ্যসূত্রবিহীন বাস্তবতাবিবর্জিত অতি কথিত এ ধরনের রিপোর্টে বাংলাদেশ পুলিশের পেশাদার সদস্যদের মনোবল ক্ষুদ্রের পাশাপাশি পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। পলাতক সাইবার সন্ত্রাসীদের অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশ পুলিশের পেশাদার ভূমিকাকে জনসমক্ষে প্রশ্নবিদ্ধ করে পুলিশকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য কতিপয় মিডিয়া অত্যন্ত সচেতনভাবে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এক ধরনের কুৎসিত প্রচারযজ্ঞে শামিল হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ছাড়াও কোনো কোনো মিডিয়া হাউস ব্যক্তিগত আক্রোশ ও নিজস্ব স্বার্থরক্ষায় কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করছে, যা সাংবাদিকতার নীতিমালা বিরোধী।

বাংলাদেশ পুলিশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে আসছে। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হয় না। প্রায় বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়।
 
বাংলাদেশ পুলিশ কখনোই গণমাধ্যমের কাছে এ ধরনের অপেশাদারি সাংবাদিকতা প্রত্যাশা করে না। আমরা চাই, সমাজের সবার ন্যায়সঙ্গত অধিকার সুনিশ্চিত হোক, সমাজ থেকে বঞ্চনা দূর হোক, মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত হোক। আমাদের প্রাণপ্রিয় স্বদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে মর্যাদায় আলোকিত প্রাঙ্গণে উপনীত হোক।
 
জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে বিপিএসএ।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক