কেটে ফেলা চুলের বিষয়ে ইসলাম কী বলে

কেটে ফেলা চুলের বিষয়ে ইসলাম কী বলে

 মাইমুনা আক্তার

চুল মহান আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত। মানুষের উচিত মহান আল্লাহর এই অমূল্য নিয়ামতের যথাযথ সম্মান করা। কারণ মহান আল্লাহ মানুষকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন, তাদের অঙ্গগুলোও সম্মানিত। তাই মানব অঙ্গের সঙ্গেও এমন ব্যবহার করা যাবে না, যা তাদের সম্মান হানি করে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর আমি মানব সন্তানকে সম্মানিত করেছি...। ’
(সুরা : ইসরা, আয়াত : ৭০)

স্বাভাবিকভাবেই মানুষের চুল পড়ে যায়, অনেক ক্ষেত্রে কাটাতে হয়। এই পড়ে যাওয়া বা কেটে ফেলা চুলগুলো যত্রতত্র ফেলে দেওয়া উচিত নয়। এতে মহামূল্যবান এই অঙ্গটির অপব্যবহারও হতে পারে।

কিংবা এর মাধ্যমে রোগ-জীবাণুও ছড়াতে পারে। যেমন কোনো ব্যক্তি যদি তার কেটে ফেলা চুল সঠিকভাবে দাফন না করে, তাহলে তা বাতাসে উড়ে খাবারে বা পানিতে মিশে যেতে পারে। ফলে তার সঙ্গে লেগে থাকা জীবাণু পেটে গিয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

মানুষের চুল ব্যবহার করে তাকে বিপদে ফেলার মতো অনেক রাস্তাও এই বিজ্ঞানের যুগে খোলা রয়েছে।

তাই আমাদের উচিত কেটে ফেলা বা ঝরে যাওয়া চুলগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ করা। বর্তমানে অনেকে চুল সংরক্ষণ করে বিক্রি করার জন্য, শরিয়তের দৃষ্টিতে এই কাজটিও হারাম। ইসলাম এই কাজটি সমর্থন করে না। এর যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থা কী হবে, তা পবিত্র কোরআনেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি কি পৃথিবী সৃষ্টি করিনি ধারণকারিণীরূপে, জীবিত ও মৃতদের?’ (সুরা : মুরসালাত, আয়াত : ২৫-২৬)

তাফসিরে কুরতবিতে এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে এই আয়াতের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিকে দাফন করা এবং মানুষের চুল ও পড়ে যাওয়া অঙ্গ দাফন করার বিধান প্রমাণিত হয়।

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই মাটি থেকেই আমি তোমাদের সৃজন করেছি, এতেই তোমাদের ফিরিয়ে দেব, এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদের উত্থিত করব। ’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ৫৫)

তাই যেভাবে মানুষের গোটা দেহের হায়াত শেষ হয়ে যাওয়ার পর মাটিতে সমর্পিত করতে হয়, তেমনি তার কোনো অঙ্গের হায়াত শেষ হয়ে যাওয়ার পর তা মাটিতে দাফন করতে হয়।

ইমাম আহমদ (রহ.)-কে এক ব্যক্তি কর্তিত চুল ও নখের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এগুলো কি দাফন করব, নাকি ফেলে দেব?’ তিনি বলেন, ‘দাফন করে ফেলো। ’ লোকটি বলল, ‘আপনি এ ব্যাপারে কিছু পেয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘ইবনে ওমর (রা.) এগুলো দাফন করে ফেলতেন। ’ (আল মুগনি, ইবনে কুদামা : ১/১১০)

মহান আল্লাহ আমাদের বিষয়টি উপলব্ধি করে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

 


 

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর