রাইসিকে যেসব কারণে ভয় পেতো পশ্চিমা বিশ্ব

রাইসিকে যেসব কারণে ভয় পেতো পশ্চিমা বিশ্ব

রাইসিকে যেসব কারণে ভয় পেতো পশ্চিমা বিশ্ব

অনলাইন ডেস্ক

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তার পুরো জীবন ছিল বেশ উল্লেখযোগ্য। তিনি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট। একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন।

 

২০২১ সালে ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা ইব্রাহিম রাইসি। কিন্তু তার আগেও রাইসি ছিলেন বেশ আলোচিত ব্যক্তি। বিশেষ করে তিনি যখন বিচারকের ভূমিকায় ছিলেন। তার নানা কর্মযজ্ঞ ইসরায়েল তথা পশ্চিমা বিশ্বে তৈরি হতো ভয়ের কারণ।

তেমন কিছু ঘটনা আলোকপাত করা যাক-
দীর্ঘদিনের বোঝাপড়ার কারণে রাইসিকে খামেনির উত্তরসূরি মনে করা হতো। আর এটাই ইসরায়েলের নেতাদের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ৮৫ বছর বয়সী খামেনি প্রায় অসুস্থ থাকছেন, তাই রাইসির মতো একজন কট্টর নেতা ইরানের পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হলে, ইসরায়েলকে এক দণ্ডও শান্তিতে থাকতে দিতেন না। এর নমুনাও কয়েক সপ্তাহ আগে দেখেছে ইসরায়েল। তাই ইসরায়েলের নেতারা খামেনির চেয়ে রাইসিকে বেশি ভয় পেতেন।

মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথরিটি উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। রাইসি পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এ সভা।

মাত্র ২৫ বছর বয়সে রাইসি তেহরানের ডেপুটি কৌঁসুলি নিযুক্ত হন। যে চারজন বিচারককে নিয়ে ১৯৮৮ সালে ‘ঘাতক কমিটি’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা গোপন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই চারজনের একজন।

যে হাজার হাজার বন্দী তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ইতোমধ্যেই জেল খাটছিলেন, ওই ট্রাইব্যুনাল তাদের ‘পুনর্বিচার’ করে। এদের বেশিরভাগই ছিলেন বামপন্থী বিরোধী দল মুজাহেদিন-ই-খাল্ক (এমইকে)র সদস্য। এই গোষ্ঠী পিপলস মুজাহেদিন অর্গানাইজেশন অব ইরান বা পিএমওআই হিসাবেও পরিচিত ছিল।

ঠিক কতজনকে ওই ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল সেই সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলে, প্রায় ৫০০০ পুরুষ ও নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল এবং অজ্ঞাত গণকবরে তাদের মাটি দেয়া হয় - যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে তারা তুলে ধরে। ইসলামি এই প্রজাতন্ত্রের নেতারা ওই গণহত্যার কথা অস্বীকার করেন না। তবে সেইসব ঘটনার বিস্তারিত বা বৈধতার বিষয় তারা কখনো আলোচনা করেন না।

ওই মৃত্যুদণ্ডে তার ভূমিকার কথা ইব্রাহিম রাইসি বারবার অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি একথাও বলেছেন যে ইরানের সাবেক সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহুল্লা খোমেইনির জারি করা ফতোয়ার কারণে ওই মৃত্যুদণ্ডাদেশ যুক্তিসংগত ছিল।

news24bd.tv/aa