পাঁচ হাজার গাছ কাটলো বন বিভাগ, আরও কাটা পড়ছে ৪ হাজার

পাঁচ হাজার গাছ কাটলো বন বিভাগ, আরও কাটা পড়ছে ৪ হাজার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করছে সারাদেশ। প্রকৃতিকে ঠাণ্ডা করতে দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তবে ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার গাছ কেটে ফেলছে বন বিভাগ।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ও পাড়িয়া ইউনিয়নের ৩৭ কিলোমিটার রাস্তার ৪ হাজার গাছ কাটার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। দাবদাহের এই দুঃসময়ে গাছ কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরপত্র পাওয়া দিনাজপুরের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা কিছু শ্রমিক রাস্তার গাছ কাটছে। এক সপ্তাহ আগে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী ৪ হাজার গাছ কাটবেন তারা। গত এক সপ্তাহে ৩ শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা।

গেলো বছরেও এই উপজেলার বড়বাড়ী, আমজানখোর ও চাড়োল ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তার ৫ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। পরে ৮ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে নতুন গাছ লাগালেও অবশিষ্ট ফাঁকা জায়গাগুলোতে গাছ লাগানোর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

জেলা বন বিভাগ বলছে, ৮ ইউনিয়নে রাস্তার দুই পাশে অবশিষ্ট থাকা গাছগুলো কেটে ফেলার জন্য দরপত্র দিয়েছে বন বিভাগ। এর মধ্যে দুটো ইউনিয়নে গাছ কাটা শুরু হয়ে গেছে। বন বিভাগের আহ্বান করা দরপত্র অনুযায়ী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের লোহাগাড়া থেকে তিলকরা সরাকন্দি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও ধনতলা ইউনিয়নের পাঁচপীর থেকে ফুটানী হাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার, তিলময় বাবুর বাড়ি থেকে এনামুল চেয়ারম্যানের বাড়ি হয়ে বাহার জিলা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও সিন্দুরপিন্ডি থেকে খোঁচাবাড়ি হয়ে তীরনই নদীর শেষ সীমানা এবং দলুয়া হয়ে পান্তা ভিটা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারসহ মোট ৩৭ কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার পাশের বিশাল আকৃতির গাছগুলোর গায়ে সিরিয়াল নম্বর দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হরিপদ বলেন, রাস্তার ধারে থাকা গাছগুলোর ছায়ায় কৃষক ও শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষেরা বসে একটু বিশ্রাম নেয়। এ তীব্র দাবদাহের মধ্যেও এখন রাস্তার দুইপাশের বিশালাকৃতির গাছ খুঁজেই পাওয়া যায় না। যে কটা আছে সেগুলোও কেটে ফেললে এলাকাটা মরুভূমি হয়ে যাবে। তাই কয়েকটা মাস কোনো গাছ না কাটলে খুব উপকার হয়।

পথচারী আব্দুল্লাহ বলেন, পরিবেশটা ঠান্ডা হলে গাছগুলো কাটুক তাতে আপত্তি নেই। এখন গাছগুলো কাটলে প্রচণ্ড রোদে মানুষসহ পশুপাখির জন্য পরিবেশ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।

পাড়িয়া ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বলেন, দরপত্র যখন হয়েছে ঠিকাদার গাছ কাটবেই। এতে বাঁধা দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে গ্রামবাসীর দাবি গরমের দিনগুলো পার করে কাটুক। এটা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগকে প্রয়োজনে লিখিত আকারে জানাব আমরা।

ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের বন কর্মকর্তা শফিউল আলম মন্ডল বলেন, গাছগুলো কাটার উপযোগী এবং যারা লাগিয়েছেন তাদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় গাছগুলো কাটা বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদার ও বন বিভাগকে জানিয়েছি। তাপদাহ কমে গেলে দরপত্র অনুযায়ী ঠিকাদার কাটবেন।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক