‘কলোরেক্টাল ক্যান্সার নিরাময় ও প্রতিরোধযোগ্য’

কলোরেক্টাল ক্যান্সার বিশ্বে ক্যান্সারের তৃতীয় প্রধান কারণ

এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকার পেশেন্ট ফোরাম

‘কলোরেক্টাল ক্যান্সার নিরাময় ও প্রতিরোধযোগ্য’

নিউজ টোয়েন্টিফোর হেলথ

কোলন ক্যান্সার ও রেক্টাল ক্যান্সার একত্রে কলোরেক্টাল ক্যান্সার নামে পরিচিত। বিশ্বে নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে এটি ক্যান্সারের তৃতীয় প্রধান কারণ। বাংলাদেশেও এই রোগের প্রকোপ দিন দিন বেড়ে চলেছে। তবে আশার কথা যে, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থার কারণে কলোরেক্টাল ক্যান্সারে মৃত্যুর হার এখন কমে আসছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি শনাক্ত করে চিকিৎসা নিলে রোগীরা সুস্থ হয়ে যায়। সচেতন হয়ে কিছু নিয়ম মেনে চললে ও নিয়মিত স্ক্রিনিং করলে রোগটিকে প্রতিরোধও করা সম্ভব।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) কলোরেক্টাল ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে দেশের প্রথম জেসিআই স্বীকৃত্ব এভারকেয়ার হসপিটাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও পেশেন্ট ফোরামে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকার গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও হেপাটোলজি বিভাগের কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. লুৎফুল এল. চৌধুরী, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ইকবাল মুর্শেদ কবির, সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. শায়লা পারভীন, মেডিকেল অনকোলজির কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ফেরদৌস শাহরিয়ার সাইদ, জেনারেল অ্যান্ড ল্যাপারোস্কপিক সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন, এভারকেয়ার হসপিটালস বাংলাদেশের সিইও ও এমডি ডা. রত্নদীপ চাষ্কার, মেডিকেল সার্ভিসেস বিভাগের ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ, চিফ মার্কেটিং অফিসার ভিনয় কাউল সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কয়েকজন কলোরেক্টাল ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী তাদের চিকিৎসার অভিজ্ঞতা ও অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো শেয়ার করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বলেন, কলোরেক্টাল ক্যান্সারের কিছু উপসর্গ হলো-মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন, মলত্যাগের সময় রক্তক্ষরণ, তলপেটে অসস্থিকর অনুভূতি ও ব্যথা, অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। তবে এই রোগটির সুনির্দিষ্ট কারণ অজানা। বংশগত কারণ ছাড়াও ধুমপান ও মদ্যপান, লাল মাংশ বেশি খাওয়া, বয়স বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ওজন, পানি কম পান করা, মলাশয়, পলিপ অথবা অন্যান্য ক্যান্সার, আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রোনস ভিজিজ, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার ভক্ষণকে এই ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়।  

বিশেষজ্ঞ বক্তারা আরো বলেন, আঁশযুক্ত খাবার, শাকসবজি, ফলমূল বেশি খাওয়া, বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী দেহের ওজন বজায় রাখা, নিয়মিত কায়িক শ্রম ও ব্যায়াম করা, মদ্যপান ও ধূমপান ত্যাগ করা, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করা, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার (লাল মাংস, ফাস্টফুড) বর্জন করলে কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।  

নিয়মিত স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা নিরিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে তারা বলেন, কারোর বয়স ৩৫ বছর হলেই কিছু স্ক্রিনিং নিয়মিত করা উচিৎ। যেমন : ফিকাল অকাল্ট ব্লাড টেস্ট, ডাবল কন্ট্রাস্ট বেরিয়াম এনেমা, সিগময়ডস্কপি, কলোনোস্কপি ইত্যাদি। কলোনোস্কপি পরীক্ষায় রোগীকে অজ্ঞান করার দরকার হয় না; শুধুমাত্র কয়েক মিনিট ঘুম পাড়িয়ে দেয়া হয়। সুতরাং এ নিয়ে ভয় বা বিভ্রান্তির কোন কারণ নেই।

কলোরেক্টাল ক্যান্সারের চিকিৎসার পদ্ধতিগুলো হলো, সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, ইমিউনো থেরাপি ইত্যাদি। দেশের প্রথম জেসিআই স্বীকৃত এভারকেয়ার হাসপাতালে এর উন্নত ও সমন্বিত চিকিৎসা বিদ্যমান। ভবিষ্যতে এখানে রোবটিক সার্জারিও চালু হবে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

news24bd.tv/health