৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, ১০ দিনেও অধরা অভিযুক্ত!

৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, ১০ দিনেও অধরা অভিযুক্ত!

৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, ১০ দিনেও অধরা অভিযুক্ত!

আলী আজম

রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় ৪ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয় গত ১৪ এপ্রিল রাতে। তবে মামলার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও অদৃশ্যকারণে ধর্ষণচেষ্টার অভিযুক্ত মো. রাব্বিকে (১৯) এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়াতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারটির।

তবে হাজারিবাগ থানা পুলিশের ভাষ্য আসামি রাব্বিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

আবার পুলিশের ঠিক উল্টো কথা বলছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা বলছেন, এই ঘটনার পর আসামি রাব্বিকে এলাকায় দেখা গেছে। কিন্তু আমরা শুনতেছি পুলিশ নাকি তাকে খুঁজে পাচ্ছে না।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ওসি (তদন্ত) সঙ্গে কথা বললেও কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

শিশুটির বাবা মো. মিজানুর রহমান নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, এই ঘটনার পর স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা তাকে এই বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে বলেন।  তবে ঘটনার দিন রাতে থানায় মামলা করেছি ওসি স্যারের সহায়তায়। (ঘটনার পর স্থানীয় নেতা ও পুলিশের বক্তব্যর তথ্য প্রমাণ নিউজ টোয়েন্টিফোরের কাছে সংরক্ষিত আছে)।

মামলার নথিতে দেখা যায়, গত রোববার ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিশুটি হাজারিবাগের বারইখালী নামক এলাকার ১৪ নাম্বার সড়কের তার মায়ের সঙ্গে নিজেদের দোকানে যায়। এরপর খেলতে আরেক শিশু বাবুর সঙ্গে একই সড়কের অলি মসজিদের পাশে টিনশেড বাসায় চলে যায়। সেই ঘরে আগে থেকে অবস্থান করা মো. রাব্বি  শিশু বাবুকে থাপ্পড় দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ওই শিশুকে পাশের বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায়। কিন্তু ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে ছেড়ে দিলে ওই শিশু মেয়েটি তার মাকে সব ঘটনা জানায়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়া হয়ে আর রাতে হাজারিবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়, যার নাম্বার ১৪।

শিশুটির বাবা মো. মিজানুর রহমান কান্না করতে করতে নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, আমার এই শিশুটির সাথে যে এই কাজ করেছে তার বিচার চাই। মামলা হলেও আসামি আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি। এমনকি মামলার কাগজ ও হাসপাতাল থেকে দেয়া কাগজও সব পুলিশের কাছে। তারা আমাকে সেই কাগজও দেয়নি।

তার দাবি, আমাকে এই বিষয়ে কারও সাথে কথা বলতেও মানা করেছে দারোগা (তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাদির শাহ)। ঘটনার পরেই দারোগা ( এসআই নাদির শাহ) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা এই বিষয়ে কথা বলতেও বারণ করেছেন। সেই নাম জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদকে তার নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করে নিজেরও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বলে এড়িয়ে যান।

হাজারিবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। তাই এই মামলার বিষয়ে এখন আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।  এই বিষয়ে আমি বিস্তারিত জেনে আপনাকে পরে বলতে পারবো। আমি ছুটিতে থাকাকালিন সময়ে ওসি (তদন্ত) সুমন এসব বিষয়ে দায়িত্বে ছিলেন। আপনি তার কাছে থেকে তথ্য নিতে পারেন।  

হাজারিবাগ থানার ওসি (তদন্ত) সুমন নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, এই মামলার আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমার কাছে নতুন কোনো তথ্য নেই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থেকে জেনে পরে জানাতে পারবো।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাদির শাহ বলেন, আমি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কী এসব মামলার কথা বলবো?

এই বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

ধানমন্ডি জোনের সহকারি কমিশনার( এসি) আবু তালেব নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে সচেষ্ট রয়েছে। আর পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।

 news24bdtv/aa