ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে ওরিয়ন গ্রুপের মানহানির মামলা

ফাইল ছবি

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে ওরিয়ন গ্রুপের মানহানির মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে সুনাম ক্ষুণ্নের অভিযোগে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছে ওরিয়ন গ্রুপ।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলাটি করা হয়। মামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মো. শামসুর রহমান এবং টেলিভিশনটির সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ রাফিকে বিবাদী করা হয়েছে।

ওরিয়ন গ্রুপের আইনজীবী আরিফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদমাধ্যমকে জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

ওরিয়ন গ্রুপ এক বিবৃতিতে সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্ডিপেনডেন্ট চ্যানেলটি বারবার একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছে। প্রতিবেদনটিতে অভিযোগ করা হয়, সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারকে কোনো বিদ্যুৎ না দিয়েও ওরিয়ন গ্রুপ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচার করেছে এবং ব্যবসায় রাজনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করেছে।

বিবৃতিতে এ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে ওরিয়ন জানিয়েছে, কোম্পানি সবসময় জাতীয় নিয়মনীতি পুরোপুরি মেনে চলেছে এবং বাংলাদেশের আরও শতাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর মতো একই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) করেছে ওরিয়ন।

দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার প্রতি প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে ২০১১ সাল থেকে ওরিয়ন তাদের ছয়টি অত্যাধুনিক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সম্পূর্ণরূপে চালু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।

এছাড়া ওরিয়ন বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য নেয়া ঋণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে এবং এ টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সমন্বয়ে সমস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার অর্থায়ন করা হয়েছে। কোনো টাকা বিদেশে পাচার হয়নি বলে দাবি করেছে ওরিয়ন গ্রুপ।

ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য প্রায়ই ঋণের প্রয়োজন হয় এবং ওরিয়ন ধারাবাহিকভাবে তা পরিশোধ করেছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে গ্রুপটি।

রাজনৈতিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে প্রভাব খাটানো এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে বিবৃতিতে ওরিয়ন গ্রুপ বলেছে, অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওরিয়ন দ্ব্যর্থহীনভাবে অস্বীকার করছে। ওরিয়নের সমস্ত বিনিয়োগ ও অর্থ বাংলাদেশেই রয়েছে, বিদেশে কোনো অর্থ পাচার হয়নি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যে মিথ্যা দাবি ও মানহানিকর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, তা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার লঙ্ঘনও। যাচাই না করে প্রমাণ ছাড়া এসব প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্দেশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ওরিয়ন গ্রুপের সুনাম নষ্ট করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ওরিয়ন গ্রুপ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।

এছাড়া দুবাই ও চীনের দুটি বিদেশি কোম্পানি ওরিয়ন গ্রুপের মালিকানাধীন হওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, বিবৃতিতে সেটিও মিথ্যা বলে জানিয়েছে গ্রুপটি। এটি বলেছে, এই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ওরিয়নের অংশীদারত্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিডিং প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোম্পানি দুটির কোনোটিই ওরিয়নের চেয়ারম্যান বা কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির মালিকানাধীন নয়।

news24bd.tv/SHS