পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার (২): তিয়াত্তরের আইনের পটভূমি ও পরিণাম

সংগৃহীত ছবি

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার (২): তিয়াত্তরের আইনের পটভূমি ও পরিণাম

অনলাইন ডেস্ক

ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে সবচাইতে বেশি সামনে এসেছে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্ন। রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এর প্রধান প্রধান যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তা সংস্কার দরকার। আর এ কাতারে প্রথম দিকেই পড়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সংস্কারের প্রশ্ন।

এখন থেকে ১৭ বছর আগে ২০০৭ সালে ১/১১ হিসেবে কথিত কুখ্যাত জরুরি আইন লঙ্ঘন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে "মানুষ নেটওয়ার্ক"-এর পক্ষ থেকে "পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার প্রসঙ্গ শিক্ষক ও ছাত্র-রাজনীতি" নামে সেলিম রেজা নিউটন তিন ঘণ্টার একটি বক্তৃতা উপস্থাপন করেছিলেন।

পরে সেটি "যোগাযোগ" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।


বর্তমানে ২০২৪-এর চলমান ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে মূলত সেই আলোচনাটিই ভিডিও আকারে নতুন করে রেকর্ড করে পোস্ট করা হচ্ছে। সে আলোচনার ২য় কিস্তি (২য় অংশ) তুলে ধরা হলো-

সুতরাং চেয়ারপারসনের কাজটা পর্যবসিত হতো প্রতিদিনের কাজ চালিয়ে যাওয়ার- দৈনন্দিন যে এক্সিকিউটিভ কাজগুলো থাকে সেই কাজগুলো নির্বাহ করে যাওয়ার। এবং তার একটা প্রধান কাজ হলো সমস্ত শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।

এবং বিভাগের প্রায় যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে সমস্ত শিক্ষকের মতামত গ্রহণ করা।  

একাডেমিক কমিটিগুলোই প্রকৃতপক্ষে বিভাগের পরিচালনার ক্ষেত্রে,যদি ক্ষমতার কথা বলি তাহলে ক্ষমতাটা চলে গেল একাডেমিক কমিটির হাতে, বেশির ভাগ ক্ষমতা। আর সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষমতা শিক্ষকদের প্রমোশন, বিভাগের আর্থিক দিকগুলো দেখাশোনা করা মূলত এই দুইটা কাজ গেল প্লানিং কমিটির হাতে। তার মানে পাকিস্তান আমলের ‘হেড অফ দ্যা ডিপার্টমেন্টের’ হেড যিনি ওইটা একেবারে থাকলো না। বিভাগের ভেতরে একটা পরিষ্কার গণতান্ত্রিক এবং সবাইকে নিয়ে চলার সংস্কৃতি তৈরি হলো এবং সেই সংস্কৃতির পিছনে আইনগত সমর্থনও থাকলো।  

৭৩ এর আইন বাংলাদেশের পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরো একটা খুব সুন্দর ব্যাপার উপহার দিল, সেটা হলো এই যে রাষ্ট্র,পাকিস্তান আমলে যেটা  বার বার হতো সামরিক শাসকদের প্রায়শই  খামখেয়াল অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ওনাদের তল্পি বহন করতেন এবং ওনারা যেটা বলে দিতেন শিক্ষাসচিব, শিক্ষামন্ত্রী কিংবা পাকিস্তান আমলের সরকারগুলো যা যা বলতেন সেগুলো ক্যারি আউট করাই ছিল কর্মচারী হিসেবে উপাচার্যদের কাজ।  

কিন্তু ৭৩ এর আইন রাষ্ট্রীয় দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে রাষ্ট্রের তরফে হস্তক্ষেপ করাটা একেবারেই বন্ধ করে ফেললো আইনগতভাবে। এখন যেটা দাড়ালো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নির্বাচিত করবেন সিনেটে ভোটাভুটির মাধ্যমে এবং তারা যে তিনজন প্রফেসরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য উপাচার্য হিসেবে নির্বাচন করবেন, সেই তিনজনের মধ্য থেকেই রাষ্ট্র একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেবেন।  

কিন্তু এই নিয়োগ দেয়া পর্যন্তই, তারপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে। বিভাগ যেভাবে পরিচালিত হয়, বিভাগের মধ্যে যেভাবে সমস্ত শিক্ষকদের মতামত নিয়ে দৈনন্দিন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির ক্ষেত্রে কার্যপরিচালনার সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাস্তবত,কার্যত,মূলত যে কালচার দাড় করালেন সেটা হচ্ছে এই যে উপাচার্য একা একাই কোনো কিছু করে ফেলতেন না। তিনি সিন্ডিকেট,সিনেট থাকলে সিনেট,সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে কথা বলা, বিভাগীয় চেয়ারপারসনদের সাথে কথা বলা এভাবে সবার মতামত নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে তার উদ্যোগ জারি রাখতেন।  

এই সমস্ত কিছুর মধ্য দিয়ে তাহলে ৭৩ এর আইনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে খোলা হাওয়া পেলাম- শিক্ষায়তনিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে, শিক্ষকদের বিবেকের স্বাধীনতার প্রশ্নে এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় একটা সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনার প্রসঙ্গে।  

আমি আগে একবার বলেছি, ৭৩ এর আইনের পেছনে ছিল মূলত মুক্তিযুদ্ধ। একেবারে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্ত, শহীদ হওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, বিপুল স্বপ্ন, গণতন্ত্রের স্বপ্ন, মুক্তির স্বপ্ন এই ছবিগুলো চিন্তার, ধ্যান-ধারণার, ভাবাদর্শের। এই ছবিগুলো প্রত্যক্ষভাবে ৭৩ এর আইনকে প্রভাবিত করেছে। এই ছবিগুলোর মধ্যে একটা অদৃশ্য ছবি ছিল এরকম, একটা অদৃশ্য প্রত্যাশা ছিল এরকম যে মুক্তিযুদ্ধের এই বিপুল স্বপ্নই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে প্রত্যেকটা দিন, সারাজীবন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। ফলে সবাই ধরে নিয়েছিল যে বিশ্ববিদ্যালয় খুব সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে।  

প্রথম কিস্তি: https://www.news24bd.tv/details/183579


কিন্তু বাস্তবে দিনে দিনে বিভিন্ন সরকারের পালাবদলের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে আমরা দেখেছি আজকের দিনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুরাবস্থা সেই দুরাবস্থাকে কিন্তু ৭৩ এর আইন আটকাতে পারেনি। ৭৩ এর আইনের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হতে হতেই বিশ্ববিদ্যালয় অধঃপতিত হতে শুরু করে, শিক্ষকদের অধঃপতন ঘটতে শুরু করে,উপাচার্যদের অধঃপতন ঘটতে শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সমস্ত প্রক্রিয়া,খারাপ প্রক্রিয়া দিনে দিনে শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে। যার পরিণামে আমরা স্বাধীনতার ৫২/৫৩ বছর পরে এসে দেখতে পাচ্ছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বস্তা পচা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।  

দ্বিতীয় কিস্তি (১ম অংশ): https://www.news24bd.tv/details/184069

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এরকম অধঃপতিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার পেছনে সবচাইতে বড় যার অবদান ছিল সেটা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের। রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের একটা দিক ছিল যে আচার্য তিনি নিজে উপাচার্য নিয়োগ দিতেন। শিক্ষকের দ্বারা নির্বাচিত তিনজনের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেবেন সেটা ঠিক আছে কিন্তু সেই নিয়োগটা আচার্য দিচ্ছেনএক, দুই হলো যে সরকার আচার্য নন রাষ্ট্রের সরকার তারা তাদের ছাত্র রাজনৈতিক পেটোয়া বাহিনীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজের উপরে এবং শিক্ষক সমাজের উপরে একটা একচ্ছত্র রাজনৈতিক মতাদর্শকতা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইতেন কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখা গেছে বার বার করে যে পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিবেশ, ছাত্রদের পরিবেশ এবং শিক্ষকদের পরিবেশ যে রাজনৈতিক দলের হাতে থাকবে সেই রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক ধরণের সুবিধা পাবেন।  

তারপর প্রধানতম সুবিধা হচ্ছে যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার ক্ষেত্রে তারা তাদের ছাত্র রাজনৈতিক পেটোয়া বাহিনী, এক পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী এবং উপাচার্যের মাধ্যমে, উপাচার্যের উপরে চাপ প্রয়োগ করে, উপাচার্যকে নানা ধরণের লোভ দেখিয়ে, উপাচার্যকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে বা গোটা পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়কেই সরকারের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। এরই কারণে পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যদি সবচাইতে বড় কারণ বলি এটাই সবচাইতে বড় কারণ,এই কারণেই পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিনে দিনে সরকারের তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।  


প্রথমে সবচাইতে বড় তল্পিবাহক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মহামান্য ভাইস চ্যান্সেলররাএবং অচিরেই তার দেখাদেখি অন্যান্য যারা তল্পি বহন করতে শুরু করেন তারা হচ্ছে সিনিয়র শিক্ষকেরা। অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিতর আমরা দেখি কি ৭৩ এর আইনের প্রশ্রয়ে,অবকাশে খানিকটা মিস ইন্টারপ্রেশনের মধ্য দিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে লাল,নীল,সবুজ,হলুদ নাম দিয়ে কার্যত আওয়ামীলীগ,বিএনপি, অন্যান্য ইসলাম দলীয় জামায়াতে ইসলামী দলীয় কিংবা এমনকি কমিউনিস্ট বা বামধারার শিক্ষকদের রীতিমত দল গড়ে ওঠা। এই দলগুলোর কাছে শিক্ষকতা আর বড় প্রশ্ন থাকে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ আর বড় প্রশ্ন থাকে না। যার যার দলের স্বার্থ এবং রাষ্ট্র ক্ষমতায় কে থাকবেন, কতটুকু থাকবেন, কতটুকু তাকে ডিস্টার্ব করা যাবে, কতটুকু তাকে সংহত করা যাবে এই সমস্ত দলীয় রাজনৈতিক প্রশ্নই হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা শিক্ষক সমাজের সামনে বড় প্রশ্ন।  

এই প্রক্রিয়াতে এবার দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যক্ষভাবে না বরঞ্চ  এই লাল, নীল, হলুদ, সবুজ দলের শিক্ষকেরাই ছাত্রদেরকে ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখাগুলোকে নোংরাভাবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। এবং এই নোংরা ব্যবহারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ছাত্রদের ভিতর খুনাখুনি, মারামারি, একের পর এক হত্যাকান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে। একের প এক সশস্ত্র সংঘর্ষ যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বার বার বন্ধ হয়ে যেত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সুদীর্ঘ সেশন জ্যামের ভিতর পড়তো। তিন বছরের অনার্স কোর্স,১ বছরের মাস্টার্স কোর্স পাশ করে বের হতে, বের হতে ৬/৭/৮ বছর  লেগে যেত। এর পরিণামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা শিক্ষার্থী সমাজ এই ছাত্র রাজনৈতিক পেটোয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। তাদের মন দিন দিন খারাপ হয়ে যেতে থাকে, তাদের চেহারা দিন দিন মলিন হয়ে যেতে থাকে, এমনকি তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ, প্রেম-ভালোবাসা, বন্ধুত্ব,সাধারণ লেখাপড়া,পরীক্ষা পাশ করে সুন্দর করে ভালো রেজাল্ট করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নি্যোগ পাওয়ার স্বপ্ন দেখা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে বাইরের কোনো নিজেকে সুন্দরভাবে নিযুক্ত হতে পারার স্বপ্নগুলো সবই মলিন হয়ে যেতে থাকে এবং গোটা শিক্ষার্থী সমাজ এই ছাত্র রাজনীতির পেটোয়া বাহিনীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হন।  

শিক্ষকের মধ্যে একই প্রক্রিয়াতে অন্তত হাতে গোনা গুটি কয়েক শিক্ষকেরা এত নোংরামি, এত দলাদলি প্রতি মুহূর্তে কোন কোর্স কে দেখবে, কোন শিক্ষক কয়টা কোর্সের খাতা দেখবেন, একটা কোর্সের খাতা দেখা হলে কয় টাকা পাওয়া যাবে সুতরাং কোন শিক্ষক কয় টাকা বেশি পাচ্ছেন, কোন শিক্ষক তিন টাকা কম পাচ্ছেন, কোন শিক্ষক পরীক্ষার হলে কয়দিন ডিউটি দিচ্ছেন, এক একটা ডিউটি মানে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা, একটা প্রশ্নপত্র প্রনয়ণ করা মানে কয়েকটা টাকা, একটা প্রশ্নপত্র সমীক্ষণ করা মানে কয়েকটা টাকা, একটা পরীক্ষা কমিটিতে কাজ করা মানে কয়েকটা টাকা, একটা পরীক্ষা কমিটির অধীনে পরীক্ষার রেজাল্ট তৈরি করা, ট্যাবুলেশন গণনা করার জন্য কয়েকটা টাকা, এরকম ঘাটে ঘাটে টাকা ,এরকম ঘাটে ঘাটে এক আনা, দুই আনা, চার আনা দামের হালুয়া রুটি এইগুলো নিয়ে পর্যন্ত প্রতিমুহূর্তে,প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষকেরা এমনকি শুধুমাত্র লাল দলের শিক্ষকেরা পরস্পর, নীল দলের শিক্ষকেরাও পরস্পর, বেনিয়াসহকলার যে সাত রঙ,সর্বপ্রকার রনের, সর্বপ্রকার শিক্ষকদের ভেতরে সার্বক্ষনিক প্রতিদিনের ৩০ বছর মেয়াদী, ৪০ বছর মেয়াদী,গোটা চাকরিজীবন মেয়াদী রেশারেশি, হিংসা এগুলো তৈরি হয়।  

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সমস্তের পরিণামে আমরা এতদূর পর্যন্ত দৃষ্টান্ত দেখেছি যে সামান্য কোন শিক্ষকের প্রমোশন আগে হবে, কোন শিক্ষকের প্রমোশন পরে হবে এই ধরণের তুচ্ছ প্রশ্ন নিয়ে পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর তাহেরকে সেই বিভাগেরই তারই ছাত্র ছিলেন পরে শিক্ষক হয়েছেন এমন অন্য শিক্ষক ষড়যন্ত্র করে খুন করে ফেলেন। খুনাখুনি পর্যন্ত পৌছায় যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রেশারেশি। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের পরিবেশ বাইরে থেকে কেউ দেখতে পান না ঠিকই কিন্তু সবাই টের পান এখানে নরক কায়েম হয়েছে।

সেলিম রেজা নিউটন : শিক্ষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
  
চলবে....

শোনা থেকে লেখা : সাদিয়া মুমু

news24bd.tv/এসএম