শেখ রেহানার গুলশানের বাড়ি এখন রাষ্ট্র মালিকানায়

শেখ রেহানার গুলশানের বাড়ি এখন রাষ্ট্র মালিকানায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্র বিপ্লবে জনতার ক্ষোভে তছনছ হয়ে গেছে শেখ হাসিনার সাম্রাজ্য, জনতার ক্ষোভে পড়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার গুলশানের বাড়ি। বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তায় আইন বাতিল হওয়ায় সেই বাড়িটির মালিক এখন রাষ্ট্রপক্ষ। সীমাহীন বৈষম্য আর ঔদ্ধত্য জনবিচ্ছিন্ন করেছে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনাকে।

২০০৯ সালের এক বিশেষ আইনে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের দেড় বিঘা আয়তনের এই বাড়িটি বরাদ্দ পান শেখ রেহানা।

মাঝে মধ্যে এখানে থেকে অবসর সময় কাটাতেন তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তছনছ হয় পুরো বাড়িটি। আলিশান এ বাড়িটি ঘিরে এখন শুধুই নিরবতা। যে সড়কে থাকত কয়েক স্তরের নিরাপত্তা সেখানে এখন চায়ের দোকান ও হরেক রকম মানুষের আড্ডা।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য করা যে আইনে এই বাড়িটি বরাদ্দ পান শেখ রেহানা, সেটিও বাতিল হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় একজন বলেন, হাসিনা গ্যাছে দ্যাশে শান্তি আইছে। দ্যাশ স্বাধীন হইছে।

আওয়মী লীগ সরকার প্রধানের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে অন্য আরেকজন বলেন, জনগণের খবর বাদ দিয়ে যদি তার নিজের (শেখ হাসিনা) খবর রাখে তাহলে তো হলো না।

এর আগে ২০০১ সালে জাতীর পিতার পরিবার ও সদস্যদের নিরাপত্তায় ২০০১ পাশ করে গণভবনের মালিকানা পান শেখ হাসিনা। পরে তা বাতিল করে বিএনপি সরকার। পরে সরকার প্রধান হয়ে ফের গণভবনে ওঠেন শেখ হাসিনা। কিন্তু জুলাই গণ বিপ্লবে ৫ আগস্ট জনরোষে গণভবন ছাড়েন শেখ হাসিনা।

ক্ষমতাসীনদের দখলদারিত্বের এমন আচরণকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়েছেন দুর্নীতি বিরোধী সংগঠক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার যখন শুরু হয় তখন এটি মাদকীয় আকর্ষণের মতো মনে হয়। যখন এমনটি শুরু হয় তখন বিভিন্ন রকম আইনি ধারা উপধারা সৃষ্টি করা হয়।

আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, যে আইনে এ বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয় তা অসাংবিধানিক। নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশানের সুযোগ সংবিধানে আছে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা তো না, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী না কেবলমাত্র নারী ক্যাটাগরিতে দেওয়া যাবে। এ সুবিধাগুলো দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বৈধতা ছিল না। আগামীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে রাজনৈতিক দলগুলোর শুভবুদ্ধির প্রত্যাশা এই আইনজীবীর।

এর আগে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানাকে প্রতীকী মূল্যে গুলশানের দেড় বিঘা আয়তনের এই বাড়ি দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সে সময় ‘পরিত্যক্ত বাড়ি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত গুলশানের ৮৪ নম্বর সড়কের এনইএল (২) ১০ নম্বরের বাড়িটির প্রতীকী মূল্য ধরা হয় এক হাজার এক টাকা।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক