শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর প্রথমবার গতকাল মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমিতে হাজির হয়েছিলেন শিল্পকলা অ্যাকাডেমির গবেষণা বিভাগের পরিচালক অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। তিনি অফিসে গেলে উত্তেজনা ছড়িয়ে তার সহকর্মীদের মধ্যে। পরে তোপের মুখে শিল্পকলা থেকে বেরিয়ে চলে যান অভিনেত্রী। সেখান থেকে বেরিয়ে ফেসবুক লাইভে জানা তার সঙ্গে কী ঘটেছিল।
নিম্নে তার লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
জ্যোতিকা জ্যোতি লিখেছেন, ''কিছু পত্র-পত্রিকা ও টিভি মিডিয়ায় নানান ভুলভাল তথ্য ছড়াচ্ছে।
তখনই শুরু হট্টগোল। কানে আসলো অফিসের একটা গ্রুপ আমিসহ অন্য পরিচালকদের অফিস করতে দিবেনা। তাই বাজে পরিস্থিতি এড়াতে অফিসের কেউ কেউ দ্রুত চলে যেতে বললো। আমি কখনো পলায়নপর না, এবং এমন কোন কিছু জীবনে করিনা যে কোথাও থেকে মাথা নীচু করে বের হতে হবে। তাই সিচুয়েশনটা ফেস করতে চাইলাম। ততক্ষনে সাংবাদিকরা ফোন করা শুরু করেছে এবং জানতে চাচ্ছে যে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে কিনা। কারণ শিল্পকলা থেকে তাদেরকে এমনটাই জানানো হয়েছে। আমি জানালাম, এমনকিছু আমি জানিনা।
২টার দিকে ডিজি মহোদয় মিটিং সেরে দপ্তরে আসলে তার সাথে কথা বলার জন্য রুম থেকে বেরিয়ে লবির দিকে এগুতেই দেখলাম এক জটলা সহকর্মী আমার-হিংস্র, আক্রমণাত্মক, শকুন চোখে তাকিয়ে আছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। বুঝলাম আমাকে সরানোর জন্যই এই আয়োজন। আমি কোনদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে ডিজির দিকে এগিয়ে গেলাম। তিনি সবাইকে শান্ত করে অমাকে চলে যেতে বললেন। ডিজির কথা মেনে আমি ব্যাগপত্র নেবার জন্য রুমে ঢুকলাম।
একটু পর সেই লোভী কাকের মতো অফিসাররা আবার আমার রুমের দরজায় এসে ভিড় করলো। তখন সচিব স্যার এসে বললেন দ্রুত বেরিয়ে যেতে। আমিও কাকেদের বললাম আমি পরিচালক থাকবো কী থাকবোনা সেটা মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসবে। সে অনুযায়ী আমি কাজ করে যাবো। এই ফাঁকে কোনএকজন আমার রুমের দরজার লক ভাঙলো। আমি আমার ব্যক্তিগত অল্পকিছু জিনিস যেমন ডায়েরি, মায়ের ছবি এসব গুছাতে গুছাতে মনে হলো এরা আমাকে বিপাকে ফেলানোর জন্য অনেককিছুই করতে পরে। তাই আমার যা যা সাথে নিলাম তার সবকিছুই এদের দেখালাম,এমনকি আমার স্যানিটারি প্যাডের পেকেট উচিয়েও জিজ্ঞেস করলাম এটা আমি নিতে পারবো কিনা।
আরও পড়ুন: কেঁদে কেঁদে লাইভে যা বললেন জ্যোতিকা জ্যোতি
সচিব স্যার আবার বেরিয়ে যাবার তাগিদ দিলো। আমি স্যারের সাথে বেরিয়ে আসলাম,নীচে এসে আমার বিভাগের উপপরিচালককে সচিব স্যার দায়িত্ব দিলেন গেট অব্দি পৌঁছে দেবার । সিনা টান করে, মাথা উঁচু করে বেরিয়ে এলেও রাস্তায় এসে চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিলামনা কেন তার কারণ জানিনা!
আরও পড়ুন: 'নিজেকে এখনো শিল্পকলার কর্মকর্তা ভাবছেন' আলো আসবেই গ্রুপের জ্যোতি
যারা আতংকগ্রস্ত হয়ে আমার খবর নিয়েছেন তাদের জন্য ভালোবাসা। আজ আমার প্রত্যেক সাংবাদিক বন্ধুরা যারা ফোন করেছেন বা নক করেছেন, পেশাদারিত্বের সাথে সাথে যে সহমর্মিতার পরিচয় দিয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা। ''
news24bd.tv/TR