১১ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি ঠাকুরগাঁওয়ের সেই মাদ্রাসা সভাপতি

১১ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি ঠাকুরগাঁওয়ের সেই মাদ্রাসা সভাপতি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে একাধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার ১১ দিন পরেও সেই মাদ্রাসা সভাপতিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি রানীশংকৈল থানা-পুলিশ। এই ঘটনায় এখনো চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, ২০১১ সালে স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় রাণীশংকৈল উপজেলার ভরনিয়া গ্রামে ‘ভরনিয়া দারুল হাদীস ওয়াদ দাওয়াহ্ আস্-সালাফিয়্যা মাদ্রাসাটি গড়ে ওঠে। মাদ্রাসার দুইটি শাখা রয়েছে।

একটি ছাত্রীদের জন্য আবাসিক এবং অপরটি ছাত্রদের জন্য। আবাসিকে ১৫-১৬ জন কিশোরী রাত্রিযাপন করে। মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল করিম রাতে প্রায় সময় আবাসিকে যাতায়াত করতেন এবং মেয়েদের জুস খাওয়াতেন। জুসে মেশানো থাকতো চেতনানাশক ওষুধ।
আর সেই ওষুধ খাইয়ে ছাত্রীদের ধর্ষণ করতেন তিনি।

গত ৪ জুলাই ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হলেও তিনছাত্রীকে সভাপতির নির্দেশে ছুটি দেওয়া হয়নি। মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল করিম ওই রাতে গিয়ে ওই তিন কিশোরীকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাওয়ান। কিশোরীরা ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি পরদিন জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ জানান এবং আব্দুল করিমের বাড়ি ঘেরাও করেন।

ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতি বৃহস্পতিবার অনেক ছাত্রী বাড়ি চলে গেলেও ৪/৫ জন ছাত্রী মাদ্রাসায় রাত্রিযাপন করেন। আর এই সুযোগে ছাত্রীদের জন্য ফল, জুসসহ অন্যান্য খাবার নিয়ে আসতেন সভাপতি। কৌশলে তাদের খাওয়াতেন তিনি। খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো থাকায় থাকায় শিক্ষার্থীরা গভীর ঘুমে পড়েন। এ সুযোগে একরুম থেকে অন্যরুমে মই দিয়ে চলে যেতেন ছাত্রীদের রুমে। এরপর অচেতন ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতেন।

এদিকে এই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার ১১ দিন কেটে গেলেও আজও সেই সভাপতিকে গ্রেপ্তার করতে পাড়েনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, পলাতক রয়েছে সেই সভাপতি। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল করিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন, মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কেন এখনো কোনো ব্যবস্থা হলো না সেটি নিয়ে কথা বলে জানা যাবে।

রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়ন্ত কুমার সাহা বলেন, এ ঘটনায় এক ছাত্রীর অভিভাবক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামির মোবাইল ফোন বন্ধ আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি তাকে গ্রেপ্তার করার।

news24bd.tv/তৌহিদ