যেভাবে শুরু হয় কোরবানির প্রথা

যেভাবে শুরু হয় কোরবানির প্রথা

অনলাইন ডেস্ক

আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের জন্য কোরবানির দিন বা পরের তিন দিনের কোনো এক দিন পশু জবাই করাকে ‘উজহিয়্যাহ’ বা কোরবানি বলা হয়। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা করা ও নিজের প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করার দৃষ্টান্ত থেকে পশু কোরবানির সূচনা হয়। শেষনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের আগে যুগে যুগে সব শরিয়তে কোরবানির বিধান চালু ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি সব জাতির জন্য কোরবানির বিধান রেখেছি, যেন আমি তাদের জীবনোকরণ হিসেবে যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি তাতে (জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম স্মরণ করে।

(সুরা হজ, আয়াত :  ৩২)

সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর শর্তসাপেক্ষে কোরবানি করা ওয়াজিব।

১০ থেকে ১৩ জিলহজের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হলে কোরবানি করা ওয়াজিব। অর্থাৎ এই সময় কারো কাছে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা থাকলে অথবা এর মূল্যের সমপরিমাণ সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত থাকলে কোরবানি করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো।

’ (সুরা : কাউসার, আয়াত : ২)।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১২৩)

মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কোরবানি করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লহর কাছে (কোরবানির পশুর) মাংস, রক্ত পৌঁছে না, বরং আল্লাহর কাছে তোমাদের তাকওয়াত (তথা একনিষ্ঠভাবে সম্পন্ন আমল) পৌঁছে। ’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)

মূলত আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর অনুসরণ করে মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে কোরবানির নিয়ম বিধিবদ্ধ হয়। মহান আল্লাহ ইবরাহিম (আ.)-কে স্বপ্নযোগে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহর জন্য কোরবানির নির্দেশ দেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তিনি সন্তানকে কোরবানি করতে পুরোপুরি প্রস্তুতি নেন। এমন সময় মহান আল্লাহ ইসমাঈল (আ.)-এর বদলে পশু কোরবানির নির্দেশ দেন। মুমিনরাও যেন নিজেদের প্রাণ ও প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর জন্য সঁপে দিতে সদা প্রস্তুত থাকে এটাই কোরবানির প্রধান শিক্ষা।

কোরআনে পিতা-পুত্রের আত্মত্যাগের ঘটনা : আল্লাহর জন্য পিতা ও পুত্রের উৎসর্গের পুরো ঘটনার বর্ণনা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তিনি [ইবরাহিম (আ.)] বলেন, হে আমার রব, আমাকে একজন সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাকে একজন বুদ্ধিমান পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। অতঃপর সে [ইসমাঈল (আ.)] যখন কাজের বয়সে উপনীত হয়, তখন ইবরাহিম বলল, হে আমার পুত্র, আমি স্বপ্নে দেখি যে তোমাকে আমি জবাই করছি। এখন তোমার মত কী, বলো। সে বলল, হে আমার পিতা, আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন, আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং তিনি [ইবরাহিম (আ.)] পুত্রকে জবাইয়ের জন্য কাত করেন। তখন আমি তাকে ডাক দিয়ে বললাম, হে ইবরাহিম, আপনি স্বপ্নের আদেশ পালন করেছেন। আমি এইভাবেই সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই তা ছিল সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে একটি (কোরবানির) জন্তুর মাধ্যমে মুক্ত করি। আমি তা পরবর্তীদের জন্য বিধান হিসেবে রেখেছি। ’ (সুরা সাফফাত, আয়াত : ১০০-১০৮)
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক