এমপি আনার হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে এই আখতারুজ্জামান

এমপি আনার হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে এই আখতারুজ্জামান

অনলাইন ডেস্ক

চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যার পেছনে বারবার উঠে আসছে একটি নাম। তিনি আখতারুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী। কলকাতার নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হন, সেই বাসা আখতারুজ্জামানই ভাড়া নিয়েছিলেন বলে ধারণা পুলিশের।

তদন্ত সূত্রে পরে জানা যায়, আখতারুজ্জামানের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে।

এলাকায় তিনি শাহীন মিয়া নামে পরিচিত। তার ভাই কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব সূত্রতার জের ধরে ভারতে আখতারুজ্জামানের আদেশেই খুন হন আনার।  

গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান আনার।

প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার দীর্ঘদিনের বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। এরমধ্যে বুধবার (২২ মে) সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার।

পরে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পরে বলেন, আনারকে কলকাতার ওই বাসায় ‘পরিকল্পিতভাবে খুন’ করা হয়েছে। ভারতীয় পুলিশের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য পওয়ার পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। আর যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে খুনিরা বাংলাদেশের বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিকালে নিউ টাউনের সঞ্জীভা গার্ডেনস নামের ওই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ঘুরে দেখে কলকাতার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী। তিনি বলেন, আমাদের কাছে যা তথ্য আছে তাতে এমপি আনোয়ারুলকে সর্বশেষ ১৩ মে এখানে ঢুকতে দেখা গেছে। এর আগে তিনি এখানে এসেছিলেন কিনা সেটি আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে তার লাশ উদ্ধার করা যায়নি।

লাশ উদ্ধার না করে কীভাবে তাকে হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অখিলেশ বলেন, আমাদের কাছে ইনপুট আছে। ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনারকে খুন করা হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের মালিক সন্দ্বীপ রায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী। ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

তবে আখতারুজ্জামান এখনো ধরা পড়েননি। ভারত থেকে নেপাল হয়ে এরইমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে খবর পেয়েছে ঢাকার পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, শুনেছি যে মেয়র সাহেবের ভাই শাহীন মিয়ার পুরো নাম আখতারুজ্জামান। তবে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে আগের কোনো অভিযোগ নেই বা কোনো ডকুমেন্ট নেই।

কোটচাঁদপুরের মেয়র সহিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ওর পুরো নাম আখতারুজ্জামান। ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ওর পরিবার সেখানে থাকে। ও নিজেও সেখানে থাকে। এক সপ্তাহ আগে ও বাড়ি এসেছিল। তবে বাড়ি থেকে আক্তারুজ্জামান কোথায় গেছেন সে বিষয় তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

এদিকে, কলকাতার পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, ১৩ মে নিউ টাউনের ওই বাসায় শ্বাসরোধে খুন করা হয় আনারকে। পরে টুকরো টুকরো করে কাটা হয় দেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিন দিন ধরে দেহের অংশগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। তবে সেগুলো কোথায় ফেলা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এদিকে আনারকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের’ অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। তবে আসামি হিসাবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।

news24bd.tv/SHS