রাজবাড়ী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবজ্যোতি নাগের (২৪) বিরুদ্ধে প্রেমিকার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে।
একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে প্রেমিকাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা। অভিযুক্ত দেবজ্যোতি নাগ রাজবাড়ী শহরের ভাজনচালা এলাকার দুলাল নাগের ছেলে।
কলেজছাত্রীর বাবা বলেন, রাজবাড়ী সরকারি কলেজে পড়ার সুবাদে দেবজ্যোতি নাগের সঙ্গে দুই বছর আগে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের জেরে আমার মেয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময় সে আমার মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং কৌশলে নিজের মোবাইলে আমার মেয়ের নগ্ন ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরে সে আমার মেয়ের নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। আমার মেয়ে তাকে বিয়ে করার কথা বললে সে আজ কাল বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে।
পরে গত ২৫ জানুয়ারি দেবজ্যোতি ভারত চলে যায়। আমার মেয়ে তার বাড়িতে গেলে তার পরিবারের লোকজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয়। তাড়িয়ে দেওয়ার সময় তারা আমার মেয়েকে দেবজ্যোতিকে ভুলে যেতে বলে, নাহলে গলায় দঁড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে বলে।
তিনি বলেন, আমার মেয়ে কেন তার বাড়িতে গেল; এ অপরাধে দেবজ্যোতি গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে আমার মেয়েকে ফোন করে গালিগালাজ করে এবং আবারও নগ্ন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে সে আবারও আমার মেয়েকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে বলে। আমার মেয়ে তার কথায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে রাজবাড়ী থেকে ট্রেনে উঠে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেয়। এতে তার দুই হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় সেখানকার জিআরপি পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। সেখানে দীর্ঘ এক মাস আমার মেয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের চিকিৎসার ব্যস্ততা শেষে আমি এ বিষয়ে মামলা করতে চাইলে দেবজ্যোতি নাগ আমাকে মামলা না করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। এখনও পর্যন্ত সে আমাকে হুমকি দিয়েই যাচ্ছে। তারপরও আমি আমার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি আমি ও আমার মেয়ে ন্যায় বিচার পাবো।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত দেবজ্যোতি নাগের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখারুল আলম প্রধান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
news24bd.tv/তৌহিদ
