পানি সংকটে নাজেহাল নোবিপ্রবির আবাসিক শিক্ষার্থীরা

সংগৃহীত ছবি

পানি সংকটে নাজেহাল নোবিপ্রবির আবাসিক শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক

পানি সংকটের কারণে নাজেহাল অবস্থা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আবাসিক শিক্ষার্থীরদের। সম্প্রতি টানা ৩২ ঘন্টা নোবিপ্রবির বিবি খাদিজা হলে পানি সরবরাহে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পর এ সংকট প্রকাশ্যে আসে। সংশ্লিষ্টদের দায়সারা কর্মকাণ্ডে প্রায়ই এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার (১৭ মে) বিবি খাদিজা হলে দুপুর থেকে পানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে ক্লাস শেষে হলে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। একদিকে তীব্র গরম আর অন্যদিকে পানি নেই। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বছরের অন্য সময়েও পানির সংকটে ভুগতে হয় তাদের। হলের প্রথম ব্লকের কক্ষগুলোতে পানি থাকলেও শেষের ব্লকের কক্ষগুলোতে পানি থাকে না।
এ নিয়ে হল প্রশাসনকে এর আগে কয়েকবার জানানো হলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানায় হলের শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিবি খাদিজা হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল থেকে পানির অভাবে ভুগছি। এত সময় ধরে পানি ছাড়া কীভাবে থাকা যায়? শুনেছি, পাইপ ফেটে যাওয়ায় এমন হয়েছে। অথচ পাইপ ফেটেছিলো গতকাল। এখনো পানি আসে নি। হল প্রশাসন নাকি লোকের অভাবে গতকাল কাজ শুরু করতে পারেনি। আমার বিশ্বাস হয় না এমনটা হয়েছে। তারা যদি আন্তরিকভাবে বিষয়টা দেখতো, তাহলে এই সমস্যাটা খুব দ্রুতই সমাধান হয়ে যেত। এখন পানি আসবে আসবে বলছে কবে আসবে কেউ জানে না।

বিবি খাদিজা হলের আরেক শিক্ষার্থী জানান, গত বছরও এমনটা হয়েছিলো। গরমের সময় এলে তো ইলেকট্রিসিটি থাকে না বাইরে। আমাদের হলগুলোতে পানি আসে বাইরে থেকে। খাদিজা হলের পানির লাইনগুলো এমনভাবে করা যে, পানি আগে সামনের ব্লকে যায় এরপর পিছনের ব্লকে আসে। দেখা যায় সকালে ক্লাসে যাওয়ার সময় পানি নাই, আবার দুপুরে এসেও পানি নাই। মাঝে যেই সময় হঠাৎ অল্প একটু আসে, তখন যারা থাকে তারা পায়। গত বছর পুরো গ্রীষ্মকাল এভাবেই গেছে। সব হলে পানি থাকলেও খাদিজা হলের পিছনের ব্লকে নাই। প্রভোস্টকে জানানো হয়েছিলো, কিন্তু কাজ হয় নাই। এবারও গতকাল দুপুরে হঠাৎ দেখা যাচ্ছে, পানি নাই। অনেক সময় দেখা যায় ট্যাংক ভর্তি হয়ে পানি ৪-৫ ঘন্টা অবধি পড়তেই থাকে, নষ্ট হয়। আবার কখনো পানি একদমই থাকে না।

শুধু বিবি খাদিজা হলই নয়, ছাত্রীদের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলেও পানির তীব্র সংকট। এ হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গমাতা হলে হঠাৎ করেই পানি গায়েব হয়ে যায়। কোন সময় সকালে, তো কোন সময় বিকালে পানি থাকে না। ওয়াশরুমে পানি থাকলে আবার বাথরুমে পানি থাকে না।

শনিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, আজকে সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত পানি ছিলো না, এর দুইদিন আগেও সকাল ১০ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত পানি ছিলো না। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই পানির এই সংকটের কারণে আমরা খুবই কষ্টে আছি। আমাদের এই কষ্ট দেখার কি কেউ নেই?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হলের পানির পাইপ ফেটে যাওয়ার ফলে বেশিরভাগ পানি বাইরে বের হয়ে যায়, যার কারণে হলে পানি আসেনি। কারেকশন বড় ছিলো যার কারণে ফিক্সড করা সম্ভব হয়নি। তবে শনিবার সকাল থেকে ওরা কাজ শুরু হয়েছে।

তবে পিছনের ব্লকের শিক্ষার্থীরা পানি না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এই বিষয়ে অবগত আছি। আমাদের হলে পানি আসে সব একাডেমি ও হলে পানি আসার পর। ফলে অনেক সময় দেখা যায় হলের পেছনের ব্লকে পানি থাকে না। এখন যদি পানির নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ দিতে হয় তাহলে নতুন করে পাইপলাইন বসাতে হবে, যা এই মুহুর্তে সম্ভব না। তাই আমার শিক্ষার্থীদের একটু কষ্ট করতে হবে।

এদিকে বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ মহিনুজ্জামান অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলেন, পানির মোটরে সমস্যা হওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে। আমরা এটি ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছি।

কবে নাগাদ ঠিক হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ডিপিটি বলতে পারবে। তারা এখনো আমাদের জানায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী শান্তু মজুমদার জানান, বিদ্যুতের ভোল্টেজ বার বার আপডাউন করার জন্য আসলে এ সমস্যাগুলো হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি এ সমস্যা নিরসনের জন্য।

news24bd.tv/DHL