রোমানিয়ায় আসা, থাকা ও স্থায়ী হওয়া খুব সহজ

রোমানিয়া, ছবি: ইনফোমাইগ্রেন্টস

রোমানিয়ায় আসা, থাকা ও স্থায়ী হওয়া খুব সহজ

অনলাইন ডেস্ক

রোমানিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের অনেকের মধ্যে পরিবারের সদস্যদের আনা যায় কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে৷ কিন্তু কোনো কোনো বাংলাদেশি বলছেন, রোমানিয়াতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ৷

ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা কেমন আছেন, তাদের জীবনধারা জানতে, দেশটির বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইনফোমাইগ্রেন্টস বাংলা-এর সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ৷

বাংলাদেশি অভিবাসী, দূতাবাস, আন্তর্জাতিক সংস্থা, এনজিওগুলোর সঙ্গে কথা বলে তারা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন সেখানকার শ্রমবাজারের পরিস্থিতি, বাংলাদেশি অভিবাসীদের সার্বিক অবস্থাসহ বাস্তব চিত্র৷

রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের কাছেই একটি প্যাকেজিং কারখানা ঘুরে দেখেছেন ইনফোমাইগ্রেন্টসের দুই সংবাদকর্মী৷ তুর্কি মালিকানাধীন কারাখানাটিতে নয় জন বাংলাদেশি কাজ করছেন৷

প্যাকেজিং কোম্পানিটিতে বর্তমানে হেড অব প্রোডাকশন হিসাবে আছেন বাংলাদেশি তরুণ তোফায়েল আহমেদ ভূঁইয়া৷ গত পাঁচ বছর ধরে এখানেই কাজ করছেন তিনি৷ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসার প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা হয় তার ঙ্গে৷ কারণ তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন রোমানিয়ায়৷

তোফায়েল জানালেন, রোমানিয়ায় বৈধ ভিসা নিয়ে একজন ব্যক্তি আসার কিছুদিন পর অস্থায়ী বসবাসের অনুমতির (টিআরসি) জন্য আবেদন করতে হয়৷ ওই কার্ড পাওয়ার পর একজন অভিবাসী রোমানিয়ার স্থানীয় নাগরিকদের কাছাকাছি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার অর্জন করেন৷ ফলে যাদের বৈধ টিআরসি কার্ড আছে এবং যারা এ দেশে ন্যূনতম মজুরি (তিন হাজার তিনশ লিউ বা প্রায় ৮০ হাজার টাকা) পান এবং বাসা ভাড়ার প্রমাণ থাকে তাহলে অবশ্যই পরিবারের সদস্য আনা যাবে৷

তোফায়েল বলেন, এই প্রক্রিয়াটি ‘‘এখানে এতো এতো ইজি, আমার মনে হয় অন্য কোনো দেশে এতো ইজি না৷’’
প্রক্রিয়া সহজ হলেও বাংলাদেশিদের পরিবার নিয়ে আসার প্রবণতা কম৷ অনেকে সঠিক তথ্য জানেন না বলে পরিবারের সদস্যদের আনতে পারেন না বলে মনে করেন তোফায়েল৷ আবার অনেক বাংলাদেশি রোমানিয়া ছেড়ে ইউরোপের অন্য দেশে চলে যেতে চান বলে পরিবার আনার ক্ষেত্রে অতোটা আগ্রহ দেখান না৷
তবে তথ্যগত জটিলতার কারণে যারা পরিবারের সদস্যদের নিজের কাছে আনতে পারছেন না তাদের বুখারেস্টে বাংলাদেশি দূতাবাসের সহযোগিতা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি অভিবাসীরা৷ 

রোমানিয়ায় আসার কারণ সম্পর্কে তোফায়েল বলেন, ‘‘পড়ালেখা করেও দেশে কাজ পাচ্ছিলাম না৷ ২০১৯ সালে দেখলাম এই দেশে জনশক্তির প্রয়োজন রয়েছে৷ আসা যাচ্ছে৷ অ্যাপ্লাই করে খুব ইজিতে ভিসা পাওয়া গেছে৷ সেজন্য আসছি৷ আসার পর দেখলাম পরিবেশ খুব ভালো৷ এখানে কোনো রকম কোনো সমস্যা ফিল করিনি, টিল নাউ৷ সেজন্য থেকে গেছি৷’’

গত ৩১ মার্চ থেকে ভিসামুক্ত অবাধ যাতায়াতের শেঙেন জোনে অন্তুর্ভুক্তি পেয়েছে রোমানিয়া৷ প্রাথমিকভাবে আকাশপথে ও জলপথে এই সুবিধা পাচ্ছে দেশটি৷ স্থলপথে অনুমতির জন্য আরো অপেক্ষায় থাকতে হবে রোমানিয়াকে৷ শেঙেন অন্তর্ভুক্তি রোমানিয়ার অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য ইতিবাচক ও নেতিবাচক—দু ধরনের প্রভাবই ফেলতে পারেন বলে মনে করেন তোফায়েল৷

তিনি বলেন, এর আগে ইউরোপের অন্য দেশে ঘুরতে যেতে চাইলে ভিসার আবেদন করতে হতো৷ দূতাবাসগুলো আবেদন প্রত্যাখ্যান করতো৷ এখন সুবিধা হলো, ছুটি পেলে ঘুরতে যাওয়া যাবে৷সাভারের হেমায়েতপুর ছেড়ে রোমানিয়ায় এসেছেন বাংলাদেশি যুবক আদালত হোসেন৷ ইউরোপে আরো অনেক দেশ থাকলেও জীবিকার জন্য রোমানিয়াকে বেছে নেয়ার কারণটা জানালেন তিনি৷

আদালত বলেন, ‘‘রোমানিয়াতে এই কারণে আসছি, এখানে প্রথমে আসা সুবিধা ছিল, সহজ উপায়ে ভিসা পাইছি৷ ওই হিসাবে আসছি, আইসা ভালো লাগছে, থাইকা গেছি৷’’

পাঁচ বছরের ধরেই এই কারখানায় কাজ করছেন হামিদুর৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানেই (কর্মরত প্রতিষ্ঠান) আমার জন্য ভালো, সেজন্য এখানেই রয়ে গেছি৷ স্যালারি ঠিক মতো দিয়ে দেয়, আমি কোনো ভোগান্তির শিকার হইতেছি না৷’’। প্রতিবেদন সূত্র  ইনফোমাইগ্রেন্টস।

news24bd.tv/ডিডি
 

এই রকম আরও টপিক