বাংলাদেশের ইলিশের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। এর স্বাদের সঙ্গে অন্য মাছের তুলনা চলে না। ভারতীয় বৈমানিকও বাংলার ইলিশের সেই লোভ সামলাতে পারলেন না। তাইতো আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ মাছ সঙ্গে নিতে এয়ার ইন্ডিয়ার ঢাকা-কলকাতা রুটের একটি ফ্লাইট প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছেন পাইলট!
জানা গেছে, ঘটনাটি কয়েকদিন আগের।
কিন্তু এয়ারবাস এ৩১৯ আকাশযানটি নির্ধারিত সময়ে একচুলও নড়েনি। ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে হট্টগোল বেঁধে যায়।
ওদিকে, ঢাকায় উড়োজাহাজের ককপিটে দুই পাইলটের মধ্যে একজনের সঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হচ্ছিল।
পাইলটের চাহিদা অনুযায়ী বরফে আচ্ছাদিত ইলিশ মাছ এয়ারক্রাফটে নিতে চাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি ছিল ওই বন্দর কর্মকর্তার। কারণ, বিনা অনুমতিতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা বেআইনি।
বেশি দেরি হয়ে যাওয়ায় ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার চাপে শেষ পর্যন্ত বাংলার ইলিশ ছাড়াই রওনা দিতে হয়েছে পাইলটকে। এরপর এয়ারক্রাফট রিলিজ সার্টিফিকেটে (এআরসি) স্বাক্ষর ছাড়াই উড়োজাহাজের দরজা বন্ধের নির্দেশ দেন ওই কর্মকর্তা। উড্ডয়নের আগে এটি ছিল চূড়ান্ত ডকুমেন্টেশন।
যদিও পরে ফ্লাইটের বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে পারে ঢাকা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পাইলট আবারও দরজা খোলেন। এরপর নিশ্চিত করা হয় কোনো ইলিশ কিংবা নিষিদ্ধ পণ্য এয়ারক্রাফটে নেওয়া হয়নি। তারপর এআরসিতে সই করে তিনি ফিরে যান ককপিটে। শেষ পর্যন্ত রাত সাড়ে ১০টায় এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটি ঢাকা ছেড়ে যায়।
এদিকে, পাইলটের মধ্যে ঢাকা থেকে কলকাতায় ইলিশ চোরাচালানের অপচেষ্টা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া ম্যানেজমেন্ট। একইসঙ্গে দেরিতে ফ্লাইট ছাড়ার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে পাইলটকে। যদিও ইলিশ চোরাচালানে পাইলটের সম্পৃক্ততা দেখছেন না ভারতের পতাকাবাহী উড়োজাহাজ সংস্থার হর্তাকর্তারা।
জানা গেছে, ইলিশ মাছ না হয়ে অন্য কোনো পণ্য হলে ওই পাইলটকে তা নিতে হতো কার্গোতে। কারণ, ভারতীয় আইন অনুযায়ী- ফল, সবজি, কাচা মাছ ও লাইসেন্সহীন পোলট্রি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে আমদানি করা নিষিদ্ধ।
সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস
অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর