সন্তানেরা দিনের কখন কোথায় কেমন আছে প্রতিনয়তই জানতে চান অভিভাবকরা। ফলে দিন দিন বাড়ছে 'চাইল্ড সেফটি অ্যাপ' এর ব্যবহার। গত এক দশকে এর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিন্তু এটা সন্তানের উপর প্রভাব কেমন ফেলে আর এই তথ্য দিয়ে অভিভাবকেরই বা কাজ কী এমন প্রশ্নও উঠেছে!
সন্তানদের সব ধরণের বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেসব অভিভাবকেরা এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করেন তারা সন্তানদের নিয়ে অনেক কড়াকড়ি করে থাকেন। তাদের সন্তানেরা বড় হয়ে ওঠার সময় তাদের প্রত্যেকটি তথ্য অভিভাবকেরা জানেন।
বর্তমানে চাইল্ড মনিটরিং অ্যাপের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত অ্যাপটি হল লাইফ৩৬০। এটি আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলোর মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। এটা অভিভাবকদের সন্তানের প্রত্যেকটি গতিবিধির উপর নজর রাখতে সহায়তা করে বিধায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যজুড়ে অ্যাপটি অভিভাবকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট ম্যাটার্স এর হেড অফ ডিজিটাল গিসলাইন বোম্বুসা জানান, সাধারণত দুই ধরণের ট্রাকিং অপশন রয়েছে। এটা নির্ভর করে আপনি কী ধরণের অভিভাবকত্ব করতে চান তার উপরে। সহজ একটি উপায় রয়েছে, যেখানে আপনি শুধুমাত্র লোকেশন শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে আপনার সন্তানের অবস্থান জানতে পারবে। এটার জন্য আলাদা অ্যাপের প্রয়োজন নেই। কিন্তু আরেকটি উপায় রয়েছে যেখানে আপনি থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করে সন্তানের ফোনে সম্পূর্ণ অ্যাকসেস নিতে পারবেন এবং সব ধরণের তথ্যের উপর আপনার নজর থাকবে।
তবে এসবকে ছাপিয়ে অন্য একটি প্রশ্নও বড় হয়ে উঠেছে। আর তা হল, তথ্য বনাম বিশ্বাস। এটি অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানের একটি মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন তৈরি করে। সন্তানেরা ভাবছে তাদের বাবা-মা তাদের উপর বিশ্বাস করছে না, তাই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়ের উপর সবসময় কড়া নজরদারি করছে।
এই সন্তানেরা বড় হয় নিজের বাবা-মায়ের প্রতি এক প্রশ্ন নিয়ে। ফলে তাদের মানসিক বিকাশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসব আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে অভিভাবকেরা না বুঝেই তাদের সন্তানদের আরও বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন না তো?
সূত্র: বিবিসি।