রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংবিধান সংস্কার

গাজীউল হাসান খান

রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংবিধান সংস্কার

গাজীউল হাসান খান

প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটো খ্রিস্ট জন্মেরও প্রায় সোয়া ৪০০ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি ছিলেন দর্শনজগতের গুরু সক্রেটিসের ছাত্র। তাঁদের জীবনকালটাকে দর্শনজগতের ধ্রুপদি সময় বলে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁরা উভয়েই মানুষের জীবন-জীবিকা, সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতির মতো বেশ কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বিখ্যাত হয়েছিলেন।


এ কথা অনস্বীকার্য যে তাদের চিন্তা-চেতনা আজও অর্থাৎ এই একবিংশ শতাব্দীতেও বিশ্বব্যাপী মানবসমাজকে ধ্রুবতারার মতো দিক নির্দেশ দিয়ে থাকে। প্লেটো তাঁর বিশিষ্ট রচনা, ‘দ্য রিপাবলিক’-এর জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। দ্য রিপাবলিকের বিভিন্ন দিক নিয়ে চিন্তাশীল সমাজের মধ্যে যুগে যুগে বিভিন্ন বিতর্ক বা আলোচনা-সমালোচনা হলেও তাঁর (প্লেটো) বেশ কিছু মৌলিক বিষয় অত্যন্ত চমকপ্রদ। তাঁর  রচনার কোনো এক জায়গায় তিনি বলেছিলেন, ‘মানুষ যেমন হবে, রাষ্ট্রও তেমনই হবে।

মানুষের চরিত্র দ্বারাই রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। ’ এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ আমরা বিভিন্নভাবে করতে পারি। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বাণীটি অস্বীকার করতে পারি না। এ ক্ষেত্রে আমি আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে আর সামনে এগোতে চাই না।
তবে প্লেটোর উপরোক্ত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে একটি কথাই বলতে চাই আর তা হলো, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত রাজনীতিসচেতন। আমাদের স্বাধীনতার পর অর্থাৎ বিগত ৫৩ বছরে এ দেশে আমরা অসংখ্য ছাত্র ও গণ-আন্দোলন দেখেছি। পেশাজীবী কিংবা শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়কে কেন্দ্র করে দেখেছি ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংগঠিত অন্তত চার-পাঁচটি গণ-অভ্যুত্থান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে সে সমস্ত গণ-অভ্যুত্থানে সরকার বদল হলেও জনগণের অধিকার আদায় হয়নি। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি।
সরকার পরিবর্তনের মধ্যে গণমানুষের অধিকার আদায়ের খুব একটা প্রতিফলন ঘটেনি। সে কারণে আন্দোলন কিংবা অভ্যুত্থানের সফল পরিণতির পরও বারবার দেখা গেছে অতি অল্প সময়ের মধ্যে সরকার ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়তে।
ত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন কিংবা গণ-অভ্যুত্থানের পর সংগত কারণেই ছাত্র-জনতার মধ্য থেকে দাবি উঠেছে যে এবার তারা আর আগের মতো সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সর্বাত্মক মেরামত এবং বৃহত্তর অর্থে সংবিধানের অর্থবহ পরিবর্তন চায়। প্রয়োজন হলে সমাজের সব স্তরের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে কিংবা তাদের পরামর্শ নিয়ে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এবং বিশেষ করে সংবিধান সংস্কারের দুরূহ কাজটি সম্পাদন করতে হবে। এ বিষয়টি এখানেই শেষ নয়, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংস্কার ও সংবিধানের আবশ্যকীয় পরিবর্তনের পর সেগুলো গণভোটে দিতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের রায়ের জন্য। এর আগে এখানে-সেখানে কিছু রদবদল কিংবা সংস্কারের নামে পরিবর্তনের কাজ করে দেশে নির্বাচন দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ ক্ষমতা হস্তান্তর আগের মতো নিরর্থক করা যাবে না। এতে যতটুকু সময় লাগে, যুক্তিগ্রাহ্যভাবেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তা দিতে হবে। আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার বক্তব্য হচ্ছে এতে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলো অসহিষ্ণু হয়ে উঠবে না। আন্দোলনরত দেশবাসীর ধারণা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামত কিংবা সংবিধানে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে সুপারিশ আকারে সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে দিলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। কারণ নির্বাচিত সংসদ সদস্য কিংবা দলগুলো তাদের ব্যক্তি, গোষ্ঠী, শ্রেণি কিংবা দলীয় স্বার্থে অনেক প্রস্তাব কিংবা সুপারিশ বাতিল করে দিতে পারে। দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দল একই আদর্শের অনুসারী হবে না। তাদের ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা শ্রেণি স্বার্থ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন রকম হতে পারে। সুতরাং এই কাজটি আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা কিংবা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগেই করতে হবে। একমাত্র তা হলেই সেটি হবে প্রকৃত অর্থে রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামত কিংবা সংবিধানের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বা পরিবর্তন।
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে অনেকে বিপ্লব বলে আখ্যায়িত করছে, কিন্তু তাত্ত্বিক অর্থে সেটি বিপ্লব নয়। সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিতে বিপ্লবের পরিধি কিংবা বৈশিষ্ট্য ব্যাপক। একটি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংগঠিত করতে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন হয়। এই তিনটি হলো : একটি বিপ্লবী সংগঠন, একটি বিপ্লবী আদর্শ (কর্মসূচিগত দিক থেকে) এবং একটি বিপ্লবী বাহিনী। রুশ (বলশেভিক) কিংবা চৈনিক বিপ্লব ছিল দীর্ঘস্থায়ী। গণচীনে মাও জেদংয়ের নেতৃত্বে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড স্থায়ী হয়েছিল প্রায় তিন দশক। রাশিয়ায় মহামতি লেনিন দেশ-বিদেশে তাঁদের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডও চালিয়ে গেছেন দীর্ঘদিন ধরে। কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য ছাত্র-জনতার আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হলেও তাকে তাত্ত্বিক অর্থে বিপ্লব বলা চলে না। সেটি বিপ্লব হলে সংগ্রামী ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করত এবং নিজেরাই একটি সরকার গঠন করত। বারো ঘাটের বারোজনকে এনে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করত না। ক্ষমতাগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে সংবিধান বাতিল করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে বিতাড়িত করত। ৫ আগস্টের বিস্ফোরণ প্রকৃত অর্থেই ছিল একটি গণ-অভ্যুত্থান; যেমন—১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৯ এবং ১৯৯১-তে সংগঠিত হয়েছিল। ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৃহত্তর গণ-আন্দোলন কিংবা গণ-অভ্যুত্থানের ফসল। এ সরকারের মধ্যে দুজন ছাত্র ছাড়া বাকিরা প্রায় সবাই অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এই গণতন্ত্রমনা ব্যক্তিরা অবশ্যই প্রচলিত সংবিধান মেনে বর্তমান রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়েছেন। তাঁরা কোনো অর্থেই বিপ্লবী নন। তাঁরা তাঁদের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সংস্কার কিংবা গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনয়নের মাধ্যমে সমাজে কিছু বিপ্লবতুল্য পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হতে পারেন। ছাত্র-জনতার এখন নৈতিক দায়িত্ব হবে সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাঁদের সাহায্য করা। দেশবাসী তাঁদের কাছে সশস্ত্র বিপ্লব আশা করে না। দেশবাসী তাঁদের কাছে চায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা। দেশ থেকে দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুণ্ঠন, অনিয়ম ও অনাচার দূর করে একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করা। তা ছাড়া বিগত ৫৩ বছরে দেশে যারা অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে, সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে কিংবা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে জনগণের আয়বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে অবদান রাখাই হবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল কাজ।
এ কথা অনস্বীকার্য যে দেশবাসী বিগত ৫৩ বছরে রাজনীতিকদের কাছে তাদের কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা খুব কমই দেখতে পেয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনেকে দায়ী করেছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃস্থানীয় রাজনীতিকদের। কারণ নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই তাঁদের কর্তৃত্ব কিংবা স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দেশে একদলীয় কিংবা ব্যক্তিবিশেষের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়াস পেয়েছেন, যা সম্পূর্ণ অন্যায়, অন্যায্য এবং রাজনৈতিক নীতি-নৈতিকতা বিগর্হিত। দেশের আপামর ছাত্র-জনতার মতো সাধারণ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও এ অবস্থার অবসান চান। সুতরাং সবাই মিলে দেশে সুশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাহায্য করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাচার মুক্ত করতে হবে রাজনৈতিক অঙ্গনকে, যাতে ভবিষ্যতে এ দেশের রাজনীতিতে শিক্ষিত ও আদর্শবান তরুণরা স্বচ্ছন্দে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং দেশ গঠনে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারে। সুতরাং আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা রাজনীতিকে বন্দিদশা থেকে, অচলায়তন থেকে এবং সর্বোপরি দুর্বৃত্তায়নের হাত থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করতে চায়। সে কারণে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান তাদের সামনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে মেরামত কিংবা সংবিধানের সংস্কার সাধনের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ সদ্ব্যবহার তারা করতে চায়।
এখানে উল্লেখ্য, ১৯৯০-এর শেষ প্রান্তে এসে ছাত্র-জনতার এক অভ্যুত্থানে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের পতন ঘটে। এর ধারাবাহিকতায় দেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গঠন করা হয়েছিল একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই সরকারের অধীনে নির্বাচনটি কারচুপিমুক্ত হয়েছিল বলে মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছিল। এর পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত কয়েকটি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা সমালোচনামুখর হয়ে ওঠেন। তিনি এ ব্যবস্থার বিলুপ্তি দাবি করে চলমান সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচন দাবি করেন। বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা আইনি জটিলতায় আটকে গেলেও তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক বলেছিলেন, সংসদ ইচ্ছা করলে আগামী আরো দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে পারে। কিন্তু তৎকালীন সংসদ নেত্রী সে বক্তব্যকে এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, এখন থেকে সংসদ নির্বাচন চলমান সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলে আর কিছুই থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও দেখা গেছে, শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান থাকা অবস্থায়, বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশে। সেই থেকে এ দেশে শুরু হয়েছিল শেখ হাসিনার ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন এবং স্বৈরাচারী কায়দায় ক্ষমতা ধরে রাখার অপরাজনীতি। সারা বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছে চর দখলের মতো ভোটকেন্দ্র দখলের নির্বাচন, যা শেখ হাসিনাকে ক্রমে ক্রমে তৈরি করেছে এক কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসক হিসেবে। দেশে এককথায় চালু হয়েছিল অনেকটা একদলীয় শাসন, যার চূড়ান্ত পরিণতি বিশ্বব্যাপী জনগণ দেখেছে ৫ আগস্ট। সে কারণে দেশের সাধারণ নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে অবাধ, সুষ্ঠু ও কারচুপিমুক্ত করতে দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপিসহ ছাত্র-জনতা আবার নির্বাচনকালীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি তুলেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়তো বা তারই বাস্তব রূপ। এ অবস্থায় দেশের আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা এই ব্যবস্থাটিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে একটি গণভোটে জনগণের রায় নিতে চায়, যাতে ভবিষ্যতে কেউ তা বাতিল করতে না পারে। এই ব্যবস্থা বাতিল করতে হলে আরেকটি গণভোটে যেতে হবে। তা ছাড়া রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামত ও সংবিধান সংস্কার বা সংশোধনীর বিষয়গুলোও গণভোটে দিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে কোনো সরকার সংসদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার দোহাই দিয়ে তাকে বদলাতে না পারে।
 
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gazulhkhan@gmail.com

news24bd.tv/ডিডি