কিছু আলামত দেখে সহজেই অনুমিত হয় যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিদর্শন নিম্নে উল্লেখ করা হলো—
১. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও দরিদ্র, অসচ্ছল ও অভাবী আত্মীয়-স্বজনকে দান-সদকা না করা। এমন অনেক পরিবার আছে, যাদের মধ্যে সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় শ্রেণির লোক আছে। কখনো কখনো সচ্ছল লোকেরা দূরবর্তী লোকদের সহযোগিতা করলেও অভাবী নিকটাত্মীয়দের সহযোগিতা করে না।
২. হাদিয়া বা উপঢৌকন বিনিময় না করা। এটা কখনো কৃপণতার কারণে হয়ে থাকে। কখনো বা এ ধারণায় হয়ে থাকে যে যাকে হাদিয়া দেওয়া হবে তার এ ধরনের উপহার-উপঢৌকনের প্রয়োজন নেই।
৩. পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ না করা। বহু দিন, মাস ও বছর অতিক্রান্ত হয়ে যায় অথচ আত্মীয়-স্বজন পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ করে না। ফলে একে অন্যকে ভুলে যেতে শুরু করে। এটা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পূর্ব লক্ষণ।
৪. আত্মীয়দের মধ্যে একে অপরের সুখে-দুঃখে সহমর্মী ও সমব্যথী না হওয়া। বিপদে-আপদে পারস্পরিক সহযোগিতা না থাকা।
৫. আত্মীয় ও জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর একত্র হওয়ার জন্য দিনক্ষণ নির্ধারিত ও স্থান নির্দিষ্ট থাকলে সেখানে উপস্থিত না হওয়া।
৬. আত্মীয়-স্বজন সম্পর্ক বজায় রাখলে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা আর তারা সম্পর্ক ঠিক না রাখলে বন্ধন ছিন্ন করা। এটা প্রকৃত অর্থে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা নয়, বরং এটা হচ্ছে বিনিময়। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৯১)
যেকোনো মূল্যে সম্পর্ক ও বন্ধন বজায় রাখাই হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখা। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৮)
৭. বিবাহ-অলিমা, ঈদসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের দাওয়াত না দেওয়া এবং তাদের উপেক্ষা করা।
৮. খারাপ কথা ও কাজ এবং অশোভন আচরণের মাধ্যমে তাদের কষ্ট দেওয়া। এ ছাড়া বিভিন্ন উপায়ে তাদের দূরে রাখার চেষ্টা করা।
৯. তাদের হকের দিকে দাওয়াত না দেওয়া, হিদায়াতের দিকনির্দেশনা প্রদান না করা এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ না করা।
১০. ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করা কিংবা অন্য কোনো কারণে আত্মীয়দের মধ্যে দলাদলি ও বিচ্ছিন্নতা তৈরি করা।
উপরোক্ত কাজগুলো আত্মীয়তার সম্পর্ক না থাকার নিদর্শন। তাই এসব থেকে বিরত থেকে আত্মীয়দের সঙ্গে সাধ্যমতো সম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট হওয়া সবার জন্য অতি জরুরি।