ভারতীয় শকুন কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া বেড়ে ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু 

ভারতীয় শকুন কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া বেড়ে ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু 

অনলাইন ডেস্ক

এক সময় ভারতে প্রচুর পরিমাণে শকুন দেখা যেত। সাধারণত মৃত পশুর মাংস খেয়েই জীবন ধারণ করতো এই পাখি। তবে দুই দশকের বেশি সময় ধরে ভারতীয় এই শকুন কমতে শুরু করে।

অসুস্থ গরুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত এক ওষুধের কারণে মারা যেতে শুরু করে প্রকৃতি পরিষ্কার রাখা এই পাখিটি।

১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ৫০ মিলিয়ন শকুনের সংখ্যা কমে প্রায় শূন্যতে নেমে আসে। সেই সময়ে ভারতে গরুর চিকিৎসায় একটি সস্তা নন স্টেরয়েড ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ব্যবহার করা হতো। যে পাখিরা ওষুধ প্রয়োগ করা মৃত গরুর মাংস খেত সেগুলো পরবর্তীতে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

২০০৬ সালে ডাইক্লোফেনাক ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পর কিছু এলাকায় পাখির মরে যাওয়া রোধ করা সম্ভব হয়।

তবে ভারতের পাখিদের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে শকুনের তিনটি প্রজাতি (সাদা শকুন, ভারতীয় শকুন, লাল মাথার শকুন) ৯১%-৯৮% ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি আমেরিকার ইকোনমিক এসোসিয়েশনে জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে এই শকুন কমে যাওয়ার সাথে সাথে কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার বেড়ে গেছে যার ফলে ৫ বছরে প্রায় অর্ধ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে।  

এই গবেষণার সহকারী লেখক, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইয়াল ফ্রাঙ্ক বলেন, মৃত পশু খেয়ে শকুন ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কম রাখে বিধায় একে প্রকৃতির পরিষ্কারক বলা হয়। শকুন না থাকলে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ সংক্রমণ বেড়ে যায়।

গবেষকদের তথ্যমতে, ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত এই শকুন কমে যাওয়ার কারণে ১০০,০০০ বাড়তি মানুষ মারা যায়। এই মৃত্যু গুলোর কারণ ছিল ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া যা শকুনের উপস্থিতিতে নিয়ন্ত্রিণে থাকত।

এছাড়াও শকুনের অনুপস্থিতিতে রাস্তায় কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের পরিমাণও বেড়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, পশু চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ এখনো শকুনের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি খনন কাজও শকুনের আবাসস্থল ধ্বংসের অন্যতম একটি কারণ।

সূত্র: বিবিসি

news24bd.tv/কেআই/এসএম