দুদকে বেনজীরের চিঠি

বেনজীর আহমেদ

দুদকে বেনজীরের চিঠি

অনলাইন ডেস্ক

আজ রোববার (২৩ জুন) সকাল ১০টায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদকে। কিন্তু তিনি স্বশরীরে হাজির না হয়ে চিঠির মাধ্যমে দুদককে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন। তার বক্তব্য পর্যালোচনা করে তার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে দুদক। দুপুরে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

  

নির্ধারিত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) উপস্থিত না হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এ সময় জানান দুদক সচিব। তার স্ত্রী-কন্যারাও যদি যথাসময়ে উপস্থিত না হন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।  

আরও পড়ুন...দুদকে না এলে বেনজীরের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হতে পারে

দুদক সচিব বলেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার বক্তব্য দেওয়ার জন্য আজ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তিনি যথাসময়ে উপস্থিত হবেন কি না, সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানাননি বা অবগত করেননি।

আজ অফিস সময়ের মধ্যে কমিশনে উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্য না দিলে অনুসন্ধান টিম আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল তার স্ত্রী ও কন্যাদের উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুসন্ধানকারী টিম নোটিশ দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারাও উপস্থিত না হলে তাদের বিষয়েও অনুসন্ধান টিম আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

আরও পড়ুন...দুদকের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না বেনজীর

গত ২৮ মে বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ জুন তলব করে দুদক। একই সঙ্গে বেনজীরের স্ত্রী ও সন্তানদের ৯ জুন তলব করা হয়। দুদকের তলবে হাজির হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ ৫ জুন, আইনজীবীর মাধ্যমে দুদকের অনুসন্ধান দলের কাছে বেনজীর ১৫ দিনের সময় চান।

এরপর ৬ জুন বিকেলে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে দুদক তলব করলেও শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় আগামী ২৩ জুন নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে দুদক।

আরও পড়ুন... বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানের ১০ বিও হিসাব অবরুদ্ধ

গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ তার স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ গত ৩৪ বছর ৭ মাসের দীর্ঘ চাকরি জীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ এপ্রিল পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

এরপর গত ২৩ ও ২৬ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের নির্দেশ দেন।

এছাড়া তাদের বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করতে সোমবার (২৭ মে) সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক