এমপি আনার হত্যায় গ্রেপ্তারকৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ 

নিহত ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম

এমপি আনার হত্যায় গ্রেপ্তারকৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।

দুই নেতার গ্রেপ্তারের বেশ কিছুদিন পার হলেও তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে দল ও দলের বাইরে। গ্রেপ্তারের পর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেয়।

স্বীকারোক্তিতে বাবু ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর হয়ে ২ কোটি টাকায় এমপি আনার হত্যার জন্য ঘাতক শিমুল ভূঁইয়ার সাথে ডিল করেন।

গ্যাস বাবুর সাথে মিন্টুর টাকা নিয়ে কোথায় কি হয়েছে এবং বাবুর মোবাইল মিন্টু কোথায় ফেলেছে তাও বলে দেয়। এ ঘটনার পর ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুকে ঢাকা ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার করার পর তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্নস্থান থেকে তদবির চলে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

তারপরও ডিবি পুলিশ মিন্টুকে ৮ দিনের রিমান্ডে নেয়।

রিমান্ডের ৮ দিন পূর্ণ না করে ৩ দিনে মাথায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহসহ সারাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দল। এর গঠনতন্ত্র ইতিমধ্যে মানুষের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে। যে দলে নেতা ও কর্মীর সংখ্যা অসংখ্য। সেখানে জেলা পর্যায়ের দুই নেতার বিরুদ্ধে কেন সাময়িক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি? এতে দলের মধ্যে আগামীতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে বলে মনে করেন।

এদিকে এমপি আনারের নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ স্থানীয় আওয়ামী লীগ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। তাদের জনপ্রিয় নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত হোক কেন বারবার তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করে আসছে।

কিন্তু তারপরও দলীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে তাদের অভিযোগ। তবে অনেকের দাবি হত্যা ঘটনার সাথে আরও রাঘববোয়ালরা জড়িত। এর সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রভাবশালী দুই সংসদ জড়িত আছে বলে ইতিমধ্যে জানা গেছে।

তাদের কারণে ডিবি পুলিশ সঠিকভাবে তদন্তে এগুতে পারছে না বলেও এমপিকন্যা কালীগঞ্জে মানববন্ধনে অভিযোগ এনেছেন। তাছাড়া প্রভাবশালীদের কারণে গ্রেপ্তারকৃত দুজনের বিরুদ্ধে দলীয় কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না বলে চাউর হয়েছে।

এ ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি সফিকুল ইসলাম অপু জানান, হত্যার সাথে জড়িত হওয়ার কথা আমরা শুনেছি এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক চলে জেলা কমিটি। কেন্দ্রের নির্দেশ পেলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) বিএম মোজাম্মেল হক জানান, একজন অভিযুক্ত হতেই পারে, তদন্তকারী সংস্থা বলুক তারা দোষী। সে সময় আমরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

news24bd.tv/SC