লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে প্রথম পছন্দ রাহুল গান্ধী!

রাহুল গান্ধী

লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে প্রথম পছন্দ রাহুল গান্ধী!

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এবারও বিরোধীদলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইনডিয়া’ জোট। আপাতত সরকার গঠনের আশা ছেড়ে দিয়েছে তারা। বিরোধীদল হিসেবে লোকসভায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে কে হবেন বিরোধীদলের নেতা।

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর বড় কৃতিত্ব রাহুল গান্ধীর বলেই মনে করেন ‘ইনডিয়া’ জোটের অনেক নেতা। এই নির্বাচনে রায়বরেলি ও ওয়েনাড়- দুটি আসন থেকেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই এবার দেশটির সংসদেও রাহুল গান্ধী সামনে থেকে দলকে পরিচালনা করবেন; এমনটিই চান কংগ্রেস শিবিরের অনেকেই। তা ছাড়া কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ‘ইনডিয়া’ জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনাও বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে রাহুলকেই চাইছে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছিল। তখন ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে দলটির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর বড় কৃতিত্ব তাঁর বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদের দায়িত্ব রাহুল গান্ধীকে নিতে কংগ্রেস সংসদ সদস্যরা দাবি জানাতে চলেছেন। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে খুব দ্রুত কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হচ্ছে। আর সেই বৈঠকেই বিরোধী দলনেতার নাম চূড়ান্ত হবে।

দলীয় সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবার (৫ জুন) কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে ইনডিয়া জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে বিরোধীদলের নেতা নির্বাচনের বিষয়ে সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি। তবে ঘরোয়া আলোচনায় দলের নেতারা অনেকে রাহুল গান্ধীকে বিরোধীদলীয় নেতা বানানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।

বৈঠকের আগে উদ্ধব ঠাকুরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, আগামীবার ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করতে পারলে সেই সরকার ব্যবস্থায় রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি থাকলে এ নিয়ে তাদের আপত্তি থাকবে না।

দলীয় নেতারা বলেন, বিরোধীদলের প্রধানকে সিবিআই প্রধান, লোকপাল এবং মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার নিয়োগের বাছাই কমিটির বৈঠকে যেতে হয়। এসব জায়গায় প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রীও থাকেন। ফলে রাহুল গান্ধী বিরোধীদলের নেতা হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি হয়ে নিজের মত বা আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরতে পারবেন।

কংগ্রেসের আরেক অংশের মতে, রাহুল গান্ধী সারা দিন সংসদে থাকার লোক নন। ফলে তার জন্য বিরোধীদলের প্রধানের ভূমিকা পালন করা কঠিন। তিনি সংসদে বসে থাকার বদলে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার বিষয়ে আগ্রহী। এবারের নির্বাচনে গতবারের চেয়ে ৪৭টি আসন বেশি পেয়েছে কংগ্রেস। তবে বেশকিছু জায়গায় সাংগঠনিক দুর্বলতা স্পষ্ট। ফলে মাঠে সংগঠন মজবুত করার কাজে নিয়োজিত হওয়া তার জন্য বেশি বাস্তবিক।

৫৩ বছর বয়সী রাহুল গান্ধী ২০০৪ সালে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। এর পর থেকে তিনি কখনো কোনো সাংবিধানিক পদ গ্রহণ করেননি। এমনকি তাঁর দল ক্ষমতায় থাকার সময়ও নয়।

উল্লেখ্য, ভারতের ৫৪৩ আসনের এবারের লোকসভার নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ পেয়েছে ২৯৩ আসন। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইনডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৩ আসন।

news24bd.tv/DHL