প্রথমবারের মতো তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইন প্রকাশ

তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইন এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান

প্রথমবারের মতো তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইন প্রকাশ

নিউজ টোয়েন্টিফোর হেলথ

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, এই তাপপ্রবাহ এবারই শেষ নয়। আগামী বছরগুলিতেও এমন গরম আবার আসতে পারে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আজকের তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক গাইডলাইন খুবই সময়োপযোগী।

এখানে বর্ণিত নির্দেশিকা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সকল সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে এবং চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ' 

রোববার (৫ মে) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইন এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এই তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকেন শিশু আর বয়োজ্যেষ্ঠরা।

যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যারা ডায়বেটিস, হৃদরোগ বা বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন-তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই নির্দেশ আমি ইতোমধ্যে দিয়েছি।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহবান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অত্যধিক বেশি। এর কারণ, আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে ঢাকা শহরে গাছপালা সব কেটে সাবাড় করে ফেলেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের উপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারিনা, কিন্তু নগর পরিকল্পনা করার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি তাহলে অনেকাংশে পরিত্রাণ সম্ভব।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ।

গাইডলাইনে বলা হয়েছে, গরম থেকে দূরে থাকতে হবে ও মাঝেমধ্যে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হতে হবে। সারা দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। প্রয়োজনে একবারের বেশি গোসল করতে হবে। ঢিলেঢালা পাতলা কাপড় পরতে হবে ও সম্ভব হলে রঙিন পোশাক এড়িয়ে যেতে হবে। অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে গরমের আগেই করণীয় সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রচণ্ড গরমে প্রয়োজন না হলে বয়স্ক, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শিশুদের তরল খাবার খাওয়ানো ও নবজাতকদের নিয়মিত মায়ের দুধ পান করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দিনের প্রথম দিকে অথবা বিকেলে যখন তাপমাত্রা কম থাকে, তখন নির্ধারণ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ লক্ষ করা যাচ্ছে। সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত গরম বেশি অনুভূত হয়।

news24bd.tv/health