বিশ্ব গণমাধ্যমে বাংলাদেশের দাবদাহের খবর

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দাবদাহের খবর

বিশ্ব গণমাধ্যমে বাংলাদেশের দাবদাহের খবর

গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে চরম দাবদাহ চলছে। ইতোমধ্যে হিটস্ট্রোকে কয়েকজন মারা গেছেন। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠছে। আগামী কয়েকদিন এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বাংলাদেশের এই দাবদাহের খবর বেশ ফলাও করে প্রচার করেছে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম।    

বিবিসি, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতো গণমাধ্যমে দাবদাহে মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে।  

গণমাধ্যমগুলো বলছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।

এতে শিশুসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। স্কুল–কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃষ্টির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের দাবদাহ নিয়ে বিবিসির শিরোনাম, ‘প্রচণ্ড তাপে ৩ কোটি ৩০ লাখ শিশুর স্কুল বন্ধ’। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কয়েকটি এলাকার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। স্কুল–কলেজগুলো ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিলিপাইন ও ভারতও।

বিবিসি বলছে, জলবায়ু সংকটের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৩০ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার বাড়লে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর ৩ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।

‘অস্বস্তি বাড়তে পারে: এশিয়ার তাপপ্রবাহে পুড়ছে কোটি কোটি মানুষ’ শিরোনামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আবহাওয়া সাধারণত গরম থাকে। তবে এ বছর তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে।

দাবদাহের ভয়াবহতা তুলে ধরতে নিউইয়র্ক টাইমসে এক রিকশাচালকের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। নূর–এ–আলম নামের ওই ব্যক্তি ঢাকার মগবাজার এলাকায় রিকশা চালান। আগে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা রিকশা চালাতেন। গরমের কারণে এখন পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা চালান। গত সোমবার তাঁর আশা ছিল, ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করতে পারবেন। আগে দিনে এর দ্বিগুণ আয় হতো। নূর-এ-আলম বলেন, ‘আগে কখনো এত গরম দেখিনি। প্রতিবছরই গরম বাড়ে। তবে এ বছর চরম আকার ধারণ করেছে। ’

গরমের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের বৃষ্টির জন্য প্রার্থনার খবর তুলে ধরা হয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে। এএফপি বলছে, গরম থেকে মুক্তি পেতে শহরের মসজিদ ও গ্রামের মাঠে প্রার্থনা করেছেন মুসলমানরা। মুহাম্মদ আবু ইউসুফ নামে ঢাকার একজন ইমাম বলেন, ‘বৃষ্টির অভাবে জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। গরিব মানুষেরা খুব দুর্দশার মধ্যে রয়েছে। ’ এএফপির এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে স্কুল বন্ধের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বাংলাদেশে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক