ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করায় শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে মার্কিন সরকার

বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়েছে বিশ্বসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করায় শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে মার্কিন সরকার

অনলাইন ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়েছে কলাম্বিয়া, ইয়েল, নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্বসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এরইমধ্যে বিক্ষোভকারীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করছে মার্কিন সরকার। বিক্ষোভ দমাতে না পেরেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর বিবিসির।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভ দমন করে পুলিশ। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করে তারা। এর আগের দিন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডজনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং কলাম্বিয়ায় সরাসরি ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বার্কলি ও এমআইটির মতো জায়গাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক ইসরায়েলে হামলা এবং পরবর্তীতে গাজায় ইসরায়েলি পাল্টা হামলার পর থেকেই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ফিলিস্তিন বিষয়ে বিতর্ক, মুক্ত চিন্তা এবং বিক্ষোভ চলছে।
পক্ষে-বিপক্ষে থাকা সবাই জানিয়েছে যে হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের পর থেকে মার্কিন ক্যাম্পাসগুলোতে ইহুদীবিরোধী ও ইসলামোফোবিক কথা ও চিন্তার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, আমি ইহুদীবিরোধী বিক্ষোভের ও যারা জানে না ফিলিস্তিনিদের সাথে কি হচ্ছে তাদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভ দমনের জন্য নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশোকে ডেকে আনা হলে ও তারা ১০০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করার পর থেকে ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে সকল ক্লাস ভার্চুয়ালি হবে বলে জানিয়েছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলমান বিক্ষোভকে নিগ্রহমূলক আচরণ বলে উল্লেখ করে  বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট মিনুশ শফিক জানান, কলাম্বিয়ার অংশ নয় এবং ক্যাম্পাসে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করতে এসেছে এমন ব্যক্তিরাই বিক্ষোভ উসকে দিয়েছে।

নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারীরা বিজনেস স্কুলের সামনে তাঁবু গেড়ে বসে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইসরায়েলের পক্ষে থাকা অস্ত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে পাওয়া বিনিয়োগ ও দানের তথ্য উন্মুক্ত করতে চাপ দিচ্ছে।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করার সময় ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা উস্কানিমূলক স্লোগান এবং ইহুদীবিরোধী আচরণের প্রমাণ পেয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামাসের পক্ষে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতা ক্যাথি ম্যানিং কলাম্বিয়া ঘুরে এসে সেখানে ইসরায়েলের ধ্বংসের পক্ষে বিক্ষোভ করতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

কলাম্বিয়ার একটি ইহুদী গ্রুপ তাদের প্রতি হিংস্র ও পক্ষপাতমূলক আচরণের কথা জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত একজন র‍্যাবাই ৩০০ জন ইহুদী শিক্ষার্থীকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাস এড়িয়ে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে বিক্ষোভকারীরা ইহুদীবিরোধীতার অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের প্রতিবাদ ইসরায়েল রাষ্ট্র ও এর সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে বলে জানিয়েছেন।

news24bd.tv/ab