নির্ধারিত সময়েই বেনজীরের দুর্নীতির তদন্ত শেষ করা হবে: দুদক সচিব

নির্ধারিত সময়েই বেনজীরের দুর্নীতির তদন্ত শেষ করা হবে: দুদক সচিব

হাবিবুল ইসলাম হাবিব

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার দুদক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে একথা জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।  

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করা হবে।

এদিকে বেনজীর আহমেদ এর দুর্নীতি অনুসন্ধানে হাইকোর্টে রিট করেছেন এক আইনজীবী।

সম্প্রতি সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এর বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক কালের কণ্ঠ ও বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোর। ‌‘বেনজীরের ঘরে আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, দেশে-বিদেশে সাবেক আইজিপি ও তার স্ত্রী সন্তানদের নামে অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের তথ্য।

প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক দিন পরেও এ বিষয়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় বেনজীরের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে রোববার দুদকের দ্বারস্থ হন একজন সংসদ সদস্য।

এর একদিন পরই দুদক জানায়, এ বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি।  দুদক সচিব জানান অনুসন্ধানে বিলম্বের কারণ।

খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, ৩১ মার্চ সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে একটি প্রতিবেদন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু গণমাধ্যমে একই অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুদক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছে।

দুদক সচিব আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল দুদকে একটি সভা হয়। সেখানে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বিবেচনায় নিয়ে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। দুদক আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে বেনজীরের বিষয়ে অনুসন্ধানের কোনো উদ্যোগ না দেখে হাইকোর্টে রিট করেন দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়, বেনজীরের অঢেল সম্পদের মধ্যে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তাঁর বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে। এছাড়া ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানে রয়েছে দুই লাখ শেয়ার।

পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গা জুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।

অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরি জীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।

news24bd.tv/তৌহিদ