আজ ১৭ জানুয়ারি, মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের দশম প্রয়াণ দিবস। ২০১৪ সালের আজকের এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
অনন্য অভিনয়ের কারণে আজও কোটি ভক্তের হৃদয়ে সমুজ্জ্বল সুচিত্রা সেন। বাংলা সিনেমাকে তিনি নিয়ে গেছেন এক অন্য উচ্চতায়।
পাবনার গণ্ডি পেরিয়ে অভিনয় গুণে সুচিত্রা সেন হয়ে উঠেছিলেন দুই বাংলার চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মহানায়িকা। তার অনবদ্য অভিনয় এবং অপরূপ সৌন্দর্য আজও দাগ কেটে আছে কোটি দর্শকের হৃদয়ে।
সুচিত্রা সেনের প্রকৃত নাম রমা দাশগুপ্ত।
মৃত্যুর বহু বছর আগে থেকেই নিজেকে অন্তরালেই রেখেছেন সুচিত্রা। যত তিনি আড়াল হয়েছেন, ততই গোপনচারিণীর রূপ নিয়ে মানুষের মনে বেড়েছে কৌতূহল। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে, ১৯৯৫ সালে ভোটার কার্ডের ছবির জন্য একবার অন্তরাল ভেঙে বেড়িয়েছিলেন বটে কিন্তু ওই শেষ। ওই রহস্যে ঘেরা মায়াজাল ভাঙতে পারেননি সাধারণ। মিথ আর মিস্ট্রির ঘেরাটোপে বন্দী এই মানুষকে বহু কাছ থেকে দেখেছিলেন, লগ্না ধর, যিনি সম্পর্কে সুচিত্রার বোনঝি।
তিনি জানালেন শেষ বয়সে কেমন ছিলেন সুচিত্রা। তার কথায়, “নিজে খুব একটা রান্না করতেন না। কিন্তু আমার মনে আছে, একবার ডিমের ডালনা রান্না করে খাইয়েছিলেন। খেতে ভালই হয়েছিল সেটা। মাসির রান্না ঘরে যাওয়ার কোনওদিনও দরকারও পড়ত না। বাবুর্চি থাকত। ”
বাইরে খুব একটা খাওয়াতে নিয়ে যেতেন না সুচিত্রা সেন। বাড়িতেই আয়োজন করতেন সবটা। বের হতেন না। লগ্নার চোখে শেষ বয়সেও তার মাসি ছিলেন পরমসুন্দরী। তার কথায়, “কেউ যদি বলে থাকেন, মাসির চেহারা খারাপ হয়ে গিয়েছে… তা হলে খুব ভুল বলেছেন। সাদা চুলেও মাসি ততটাই সুন্দর ছিলেন। সেই গ্রেসটা কিন্তু ছিলই। ”
নিজেকে অন্তরালে রাখার সিদ্ধান্ত একান্তই তার ছিল। এতটাই দৃঢ়তা ছিল সেই সিদ্ধান্তে যে, ২০০৫ সালে দাদা সাহেব ফালকেও নিতে যাননি… হঠাৎ করে অন্তরালে চলে যাওয়ার বিষয়টা পরিবারের লোক হিসেবে কীভাবে দেখেছিলেন তিনি? বোনঝির কথায়, “দারুণ সিদ্ধান্ত ছিল এটা। আমি জানি না ঠিক কোন কারণে এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের মানুষ হিসেবে আমরা সমর্থন করেছিলাম। তারকারা মধ্যগগনে থাকার পর এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কিন্তু মাসি পেরেছিলেন। মানুষও কিন্তু তাকে সেই জায়গাতেই রেখে দিয়েছেন চিরটাকাল। ”
বাংলার উজ্জ্বল নক্ষত্র সুচিত্রা সেন। আজও তিনি সকলের কাছে উদাহরণ।