ইন্টারনেটে প্রাণঘাতী গেম ব্লু হোয়েলের প্ররোচণায় মৃত্যুর ঘটনা খবর কমে আসতে না আসতেই একই রকম প্রাণঘাতী গেম ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’ কেড়ে নিয়েছে এক কিশোরীর প্রাণ।
বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মোমো চ্যালেঞ্জ আর্জেন্টিনার ১২ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে বলে সন্দেহ করছে কর্তৃপক্ষ।
মূলত ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হচ্ছে এই মারাত্মক গেম।
পুলিশ বলছে, হোয়াটসঅ্যাপে ‘মোমো’র ছবি শেয়ার করার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজের বাড়ির পেছন দিকের জমিতে ১২ বছরের মেয়েটির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
আর্জেন্টিনায় কিশোরী নিহত হওয়ার খবর জানার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে অনলাইন গেমের ক্ষেত্রে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে।
যদিও ব্রিটেনে এখনো ছড়ায়নি ওই গেম। তবে হোয়াটসঅ্যাপে গেমটা চলছে বলে দ্রুত তা ভারতীয় উপমহাদেশসহ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
‘মোমো’ কী?
‘মোমো’ একটি মেয়ের ছবি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান জানায়, শিল্পী হায়াশি কোনোভাবেই জড়িত নন আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেয়া এই গেমটির সঙ্গে। ২০১৬ সালে টোকিওর ভ্যানিলা গ্যালারিতে একটি শিল্প প্রদর্শনীর জন্যই ওই মোমোর ছবি এঁকেছিলেন হায়াশি।
যেভাবে খেলতে হয় ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’
‘মোমো’র ওই ছবির মাধ্যমেই মোমো চ্যালেঞ্জের আমন্ত্রণ জানানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার ইউজারদের। যাকে টার্গেট করা হবে, তাকে হোয়াটস অ্যাপে একটা লিঙ্ক পাঠানো হয়। সেখানে, টেক্সট করে তাকে অজানা এক নাম্বারে ‘মোমো’ লিখে পাঠাতে বলা হয়।
মোমো লিখে টেক্সট করার মানে সে এই গেমে অংশ নিতে আগ্রহী। এরপর থেকেই গেমার বিভিন্ন রকম ভূতুড়ে ছবি পেতে শুরু করে। সঙ্গে একের পর এক চ্যালেঞ্জ। ব্লু হোয়েলের মতোই এই গেমও শেষ হয় গেমারের মৃত্যু দিয়ে। অর্থাৎ, কোনো না কোনো অজুহাতে গেমারকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়। এটা ঠিক ব্লু হোয়েলের মতোই কাজ করে।
যদিও এই গেমের উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। তবে সাইবার ক্রাইম রোধক বিভাগের একাংশের দাবি, মূলত তথ্য চুরি করাই এই গেমের মূল উদ্দেশ্য। তা ছাড়া গেমারকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা করা তো রয়েছেই।
ইউরোপ ও আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে হোয়াটস অ্যাপের এই গেমটিতে জাপানের আইএসডি কোডসহ ৩টি ফোন নম্বর, আর কলম্বিয়ার আইএসডি কোডসহ ২টি এবং মেক্সিকোর আইএসডি কোডসহ আরও ১টি নম্বরের সংযুক্ত রয়েছে।
মেক্সিকোর সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘এটা শুরু হয় ফেসবুকে। কেউ কেউ একে অন্যকে প্রলুব্ধ করে একটি অপরিচিত ফোন নম্বরে কল করার জন্য। তবে সেখানে একটি সতর্কতা দেয়া ছিল। ’
সূত্র: এএনআই, দ্য সান
অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর