গাড়ি ছাড়াই ধামরাই থানায় কার্যক্রম শুরু!

সংগৃহীত ছবি

গাড়ি ছাড়াই ধামরাই থানায় কার্যক্রম শুরু!

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধামরাইয়ে পুলিশ সদস্যদের কোথাও যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ি নেই। এখনো স্বাভাবিকভাবে মাঠে ফিরতে পারেনি পুলিশ। কার্যক্রম আটকে আছে অভ্যন্তরীণ সেবাতেই। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্ম তৎপরতা থাকলেও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।

মামলার তদন্ত ও কিংবা আসামি গ্রেপ্তারেও আগের মতো পুলিশের ভূমিকা চোখে পড়ছে না।  

ধামরাই উপজেলার আয়তন ৩০৭ বর্গ কিলোমিটার। এতে লোকসংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ। রয়েছে ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা।

এই বিশাল আয়তনের উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে পুলিশের কার্যক্রম না থাকায় চাপা আতঙ্ক রয়েছে ক্ষদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায়। পুলিশকে সহায়তায় থানায় অবস্থান ছিল সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আনসার সদস্যরা। এখনো টহলে রয়েছেন তাঁরা। সল্পপরিসরে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এলেও পুলিশ মাঠ পর্যায়ে সেবা দিতে পারছে না গাড়ির না থাকার কারণে।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি স্কুল ও কলেজ গেটে ৫ আগষ্ট সকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের এইচএসসি-২৫ ব্যাচের ছাত্র আফিকুল ইসলাম সাদ। ওইদিন শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিকেলে ধামরাই থানায় দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট করে।  

জীবন বাঁচাতে থানা থেকে পালিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। থানার সব গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। লুটে নেওয়া হয় মূল্যবান জিনিষপত্রসহ থানার আগ্নেয়াস্ত্র।

থানার ভেতরে এখনো রয়ে গেছে ধ্বংস হওয়া গাড়িগুলো। সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিক, আসবাবপত্রসহ সব সরঞ্জামাদি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় থানার কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চলছে। তবে বিভিন্ন অভিযোগ আর সমস্যা নিয়ে যারা আসছেন তাদের থানার ভেতরে বসে যতটা সম্ভব সেবা দেওয়া হচ্ছে।

গণমাধ্যমকর্মী আনিস উর রহমান স্বপন বলেন, থানায় জিডি করতে পারলেও বাইরে দৃশ্যমান পুলিশ না থাকায় এখনো স্বস্তি ফিরেনি ধামরাইয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে। বিশেষ করে বিভিন্ন ব্যাংক বুথের নিরাপত্তাকর্মী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পাড়া-মহল্লা ও ফুটপাতের দোকানীদের মধ্যে রয়েছে চাপা আতঙ্ক।

ওসি বদলি হয়েছেন বৃহস্পতিবার। তার পরিবর্তে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। ফলে ওসির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তদন্ত বা অপারেশনসের পরিদর্শক।

থানার কর্তব্যরত উপপরিদর্শক অসীম কুমার বিশ্বাস বলেন, জিডি ও মামলা নেওয়া হচ্ছে টুকটাক। এ অবস্থায় আগের মত শতভাগ তো সম্ভব না, তারপরও যতটা সম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মোমেনুল ইসলাম বলেন, শঙ্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে সচল হয়েছে থানার কার্যক্রম। সব গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সব কিছু স্বাভাবিক হতে হয়তো একটু সময় লাগছে। তবে গাড়ি থাকলে মাঠ পর্যায়ে দ্রত সেবা দেওয়া সম্ভব হতো।

এদিকে অধিকাংশ পুলিশ সদস্যর উপস্থিতি থাকলেও ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ ও চারজন এসআই যথাক্রমে পাবেল মোল্লা, সুজন সিকদার, রাজু মন্ডল ও প্রদীক বিশ্বাসকে দেখা যাচ্ছে না।

ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার পতনের আগে পুলিশের দায়ের করা নাশকতার মামলায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে ধামরাইয়ের ২৪জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে তাদের কাছ থেকে ন্যূনতম ৫০ হাজার থেকে শুরু করে সোয়া তিন লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার পরও তাদের অকথ্য শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। এ কারণে নির্দোষ পুলিশ সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে যেতেও ভয় পাচ্ছে।

news24bd.tv/DHL

এই রকম আরও টপিক