কেরালার ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩

কেরালায় ভূমিধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

কেরালার ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় ভারী বর্ষণে ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। কয়েক ডজন লোক এখনও আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কয়েক ঘণ্টার টানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট এই ভূমিধসে আহত হয়েছেন আরও প্রায় দুইশো মানুষ।

বুধবার (৩১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে জানা যায়, উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। এই অবস্থায় ভারতের এই রাজ্যে আরও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্যটির বেশ কিছু জেলার রেড অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গতকাল প্রবল বৃষ্টির মধ্যে কেরালার ওয়ানাদ জেলায় ধারাবাহিক ভূমিধসের ফলে কমপক্ষে ১৪৩ জন মারা গেছেন এবং আরও প্রায় ১৮৬ জন আহত হয়েছেন।

সরকারি সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালালেও এখনও শতাধিক লোক আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার জানিয়েছে, তাদের প্রিয়জনের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ভারতীয় সেনাবাহিনী ওয়েনাদে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টার জন্য প্রায় ৩০০ জন সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে। এছাড়া প্রয়োজন দেখা দিলে উদ্ধারকাজে নামানোর জন্য আরও ১৪০ জনকে তিরুবনন্তপুরমে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এবং সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য নৌবাহিনীর দল ও হেলিকপ্টারগুলোকে ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্যোগ ত্রাণ দলও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং উদ্ধারকারী কুকুর দলগুলোকেও এয়ারলিফট করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ওয়েনাড জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্ধার কার্যক্রমে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে।

এর আগে কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিনা জর্জ প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে বলেন, আরও অনেকেই আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

২০১৮ সালের পর কেরালায় এটি বড় ভূমিধসের ঘটনা। ওই সময় বন্যায় ৪০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল।

কর্মকর্তারা বলছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করতে ২০০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারি বিজয়ন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মঙ্গলবার "ভূমিধসে পুরো এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে"।

স্থানীয় হাসপাতালগুলো কমপক্ষে ১২৩ জন আহতের চিকিৎসা করছে এবং ৩ হাজারেরও বেশি লোককে উদ্ধার করা হয়েছে। ৪৫টি ত্রাণ শিবির স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর আগামী কয়েক দিনের জন্য ওয়ানাদ এবং অন্যান্য কয়েকটি জেলায় আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে ইদুক্কি, ত্রিশুর, পালাক্কাদ, মালাপ্পুরম, কোঝিকোড়, ওয়েনাদ, কান্নুর এবং কাসারগোড জেলার জন্য। এই জেলাগুলোতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

এছাড়া চারটি জেলা অরেঞ্জ অ্যালার্টের অধীনে রয়েছে। এসব জেলা হচ্ছে- পাঠানামথিট্টা, আলাপ্পুঝা, কোট্টায়ম এবং এরনাকুলাম।

ভূমিধসে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিধসে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে। আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য ও উদ্ধার অভিযানের সাফল্য কামনা করেছেন।

news24bd.tv/DHL