মজলুমের বদদোয়া প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) যা বলেছেন

মজলুমের বদদোয়া প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) যা বলেছেন

 মাহমুদুল হাসান আরিফ

জুলুম একটি সামাজিক ব্যাধি। অন্যের ওপর অন্যায় বা অবিচার করে নিজের পতন ও ধ্বংস ডেকে আনে জালিমরা। আপদ-বিপদ ও দুর্যোগ-বিশৃঙ্খলায় আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো জুলুম। তাই আল্লাহ তাআলা সবাইকে তা থেকে নিষেধ করেছেন।

এমনকি আল্লাহ নিজের জন্যও এটিকে হারাম করেছেন। রাসুল (সা.) হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম কোরো না। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)

মজলুমের বদদোয়াকে ভয় করা এবং তা থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।

অত্যাচারিত ব্যক্তির অন্তরের আকুতি মহান আল্লাহর কাছে খুব দ্রুত পৌঁছে যায়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া।

তিন. মজলুমের দোয়া। আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া মেঘমালার ওপরে তুলে নেন এবং তার জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেন। মহান রব বলেন, আমার সম্মানের শপথ, কিছুটা বিলম্ব হলেও আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৯৮)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন মুআজ (রা.)-কে ইয়েমেনে পাঠান এবং তাকে বলেন, মজলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কেননা তার ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মধ্যে পর্দা থাকে না। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৮)

কেউ কারো ওপর জুলুম করলে ইহকালেই এর শাস্তি পেতে হয়। কোনোভাবে ইহকালে পার পেয়ে গেলেও পরকালে অবশ্যই এই জুলুমের প্রতিশোধ নেওয়া হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোনো বিষয়ে জুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয়, ওই দিন আসার আগে, যে দিন তার কোনো দিনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ তা তার কাছ থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৯)