প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নী টিউলিপ ব্রিটেনের লেবার সরকারের সিটি মিনিস্টার নির্বাচিত হয়েছেন। একই সাথে আরেক বাংলাদেশি ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী পেয়েছেন স্থানীয় সরকারের জুনিয়র মন্ত্রীর দায়িত্ব। কী ভীষণ গর্বের ব্যাপার, অভিনন্দন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের নতুন প্রজন্মের যে দুজন মানুষ সবচেয়ে সক্রিয়, সৎ ও যোগ্য বলে প্রতীয়মান, তারা কেউই বাংলাদেশের কোনো পদে বা দায়িত্বে নেই।
একটি পত্রিকা ব্লুমবার্গ পড়ে দেখলাম, টিউলিপ সিদ্দিককে যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা আর্থিক সেবাখাত দেখাশোনা করে।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের নবগঠিত লেবার সরকারের মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ এমপি রুশনারা আলী। তাকে হাউজিং, কমিউনিটিজ অ্যান্ড লোকাল গভর্নমেন্ট মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সদ্য সম্পন্ন হওয়া যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে লেবার পার্টির হয়ে পঞ্চমবারের মতো এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন রুশনারা আলী। লেবার সরকার গঠন করার পরপরই জল্পনাকল্পনা ছিল স্টারমারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন বৃটিশ বাংলাদেশি কেউ। কিন্তু প্রথম কেবিনেট মন্ত্রীদের তালিকায় কেউ স্থান পাননি। সর্বশেষ বৃটিশ মন্ত্রী পরিষদে ইতিহাসের প্রথম মন্ত্রী হলেন বৃটিশ বাংলাদেশি দুই এমপি। টোরি সরকারের আমলে রুশনারা আলী যুক্তরাজ্যে ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ই মার্চ তার জন্ম। মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ থেকে ইস্ট অ্যান্ড অব লন্ডনে অভিবাসী হন। সেখানে যোগ দেন মালবেরি স্কুল ফর গার্লস এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কলেজে। রুশনারা আলী বেড়ে ওঠেন টাওয়ার হ্যামলেটসে। সেখানে তার পিতা একজন শ্রমিকের কাজ করতেন। রুশনারা আলী সেইন্ট জনস কলেজ, অক্সফোর্ডে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন।
যোগ্য মানুষরা দেশে কোন দায়িত্বে থাকতে চান না, বা সেখানে মেধা কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ‘সৎভাবে’ কাজ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
দেশ যোগ্য ও মেধাবী মানুষকে দেশের কাজে লাগাতে আগ্রহী না, ফিরিয়ে আনতেও আগ্রহী না; বরঞ্চ দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিজের অসততা, দুর্নীতিকে পুঁজি করে খালি মাঠে গোল দিতেই বেশি আগ্রহী। টিউলিপ, রুশনারার মতো সৎ রাজনীতিবিদরা যদি এদেশে রাজনীতি করতেন তবে তাদের ভাতের থালায় ছাই পড়ত।
আরেকভাবেও এই ঘটনা ব্যাখ্যা করা যায়। হয়ত দেশে নেই বলেই তারা সৎ ও যোগ্যতা দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের তুলে ধরতে পেরেছেন। দেশে থাকলে হয়তো পারতেন না। তাহলে এভাবেই টাকার অভাবে মেধা দেশ ছাড়বে আর টাকাও মেধার জায়গা নিয়ে নেয়া শঠদের হাত ধরে দেশ ছাড়বে। দিনের শেষে দেশে পড়ে থাকবে মশা, ধুলা, গরম, চোর-বাটপার আর ব্যর্থতা।
লেখক : লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি।
news24bd.tv/Imran/ডিডি