পি কে হালদারের সহযোগী বাসুদেব ও তার স্ত্রীর আত্মসমর্পণ

পি কে হালদারের সহযোগী বাসুদেব ও তার স্ত্রীর আত্মসমর্পণ

অনলাইন ডেস্ক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা ১৫ মামলায় জামিন চেয়ে পি কে হালদারের সহযোগী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সাবেক পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জী এবং তার স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

মঙ্গলবার (৪ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করেন।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালে বেশকিছু মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে গত ৯ মে উচ্চ আদালত থেকে ১৫টি মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন বাসুদেব ব্যানার্জী এবং তার স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জী।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের আগাম জামিন দেন।

কিন্তু ব্যাপক আলোচিত দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের এমন জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে দুদক। ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আগাম জামিন আদেশ স্থগিত করেন।

পরে ২৩ মে দুদকের করা আবেদন নিষ্পত্তি করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ।

তখন ৪ জুনের মধ্যে বাসুদেব ব্যানার্জী এবং তার স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জীকে নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

এদিকে পি কে হালদারের এই দুই সহযোগীর মধ্যে বাসুদেব ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে তথ্য গোপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসাইনের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চ আগাম জামিনের বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দেন।

ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো মামলার চার্জশিট দাখিল হলে সেই মামলায় আর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া যাবে না। বাসুদেব ব্যানার্জী এবং তার স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে সজেকা ০৪ (০১) ২০২১ নং মামলায় গত ৮ এপ্রিল চার্জশিট দাখিল হয়েছে। কিন্তু ৯ মে উচ্চ আদালতে জামিন আবেদনের সময় এই তথ্য গোপন করা হয়। চার্জশিটে পি কে হালদার, বাসুদেব ব্যানার্জী এবং অন্যান্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে মানিলন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

উক্ত মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২৩ জন আসামির মধ্যে ৫ জন দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন। বাকি প্রায় সবাই পলাতক। তবে বাসুদেব ব্যানার্জী পলাতক না থাকলেও গ্রেপ্তার হননি।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র জানায়, ২০২১ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জি ও তার স্ত্রী পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জির বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করে। এসব মামলার অন্যতম আসামি প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার।

মামলাগুলোতে প্রায় সাড়ে ৭শ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। বর্তমানে পিকে হালদার গ্রেপ্তার হয়ে ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন। পি কে হালদারকে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার সহযোগী ও অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত ১৩ সহযোগীকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

news24bd.tv/তৌহিদ