নোয়াখালীতে অনিয়মের অভিযোগে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

অনিয়মের অভিযোগে নোয়াখালীতে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।

নোয়াখালীতে অনিয়মের অভিযোগে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

নোয়াখালী প্রতিনিধি

অনিয়ম, জালভোট ও ৪০টি কেন্দ্র দখলের অভিযোগে নোয়াখালীতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ভাই সহ তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। তামাশার ভোট বাতিল করে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছেন এই তিন প্রার্থী।

এদিকে, নিজের ভোট দিতে পারলেন না বলে সাংবাদিকদের নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করেন চেয়ারম্যানপ্রার্থী সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই শাহাদাত হোসেন।

ভোট বর্জনকারী প্রার্থীরা হলেন- ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই শাহাদাত হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান  মিজানুর রহমান বাদল ও এক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।

বুধবার (২৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন তিন প্রার্থী। এর আগে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে দুই প্রার্থী যৌথভাবে এ ঘোষণা দেন।

এ সময় ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই ও চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আনারস মার্কার গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষ নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে উনার ছেলে তাসিক মির্জা ও সরকারি চাকরীজীবি ভাগিনা রাহাত সহ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আমার কর্মী ও এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। তারা সাড়ে আটটার মধ্যে সিল মেরে সব ভোট শেষ করে দিয়েছে।

মেয়র নিজে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট মারার অর্ডার দিয়ে নিজে ভোট মেরেছেন। গতরাতে আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙ্গচুর, বোমাবাজি ও হামলা হয়েছে। যার কারণে অনেক এলাকায় আমার কর্মী ও এজেন্টরা বাড়ি থেকে বের হতে পারে নাই। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কোন প্রতিকার পাইনি। এমতাবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোট বাতিল ও পুনঃতফসিল ঘোষণার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদল অভিযোগ করে বলেন, এখানে ভোটের পরিবেশ আগেও ছিল না। আমরা স্বাধীনভাবে কোন মত প্রকাশ করতে পারি নাই, ভোট চাইতে পারি নাই। ভোটারদের কাছে যেতে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়েছে, আমার নেতাকর্মীদের ও এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাই নাই। আজ সকালে আমার এজেন্ট যারা কেন্দ্রে গিয়েছে তাদের এজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলেছে, টেবিল ভেঙে প্রত্যেককে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এখন ওপেন সিল মারছে তারা। ভোটাররা কেন্দ্রে আসার সময় তাদের কুপিয়ে ও মাথা ফাটিয়ে নৌকার মধ্যে ফেলে রেখেছে। তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে পারছেনা। কিছু কিছু কেন্দ্রে পুলিশ আমাদের ভোটারদের পিটাইতেছে। এ অবস্থায় আমরা এই নির্বাচন মেনে নিতে পারি না, এটা চলতে পারে না। তাই আমি মাননীয় মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো এ ভোট বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেয়া হোক।

এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে কল দেয়া হলে অপরিচিত এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে বলেন, মেয়র মহোদয় ব্যস্ত আছেন এখন কথা বলবেন না।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত ও মৌখিক কোন অভিযোগ আসেনি। আমি নিজেই কোম্পানীগঞ্জে আছি। কয়েকটি কেন্দ্রে তাদের এজেন্টদেরও পেয়েছি। কোথায় কোন কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা আমাকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচনে কোনো সমস্যা হয়নি। তাদের অভিযোগ সত্য নয়।

news24bd.tv/ab