'আমেরিকা দ্য বিউটিফুল'

মাহবুব কামাল

'আমেরিকা দ্য বিউটিফুল'

মাহবুব কামাল

আজ কোনো সিরিয়াস কথা হবে না। আসলে জীবনকে এত সিরিয়াসলি দেখার মানেও নেই। মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী একবার সোভিয়েত ইউনিয়ন গিয়েছিলেন। তো তিনি দেখলেন, রাস্তায় লোকজন মুখে রাজ্যের সিরিয়াসনেস নিয়ে দ্রুত হাঁটছে।

মোহাম্মদ আলী তাদের একজনকে ডেকে বললেন, আপনি এত সিরিয়াস কেন? মনে হচ্ছে আত্মহত্যা করার জন্য দ্রুতবেগে বাসায় যাচ্ছেন! এরপর তিনি সেই বিখ্যাত, রে চার্লসের 'আমেরিকা দ্য বিউটিফুল' গানটি গাইতে থাকেন। যাহোক, হাল্কা কথা হবে আজ।  
স্কুলে থাকতে ওয়ার্ড মেকিংসহ নানারকম বুদ্ধিবৃত্তিক খেলায় মাততাম আমরা। তো ক্লাস টেনের মধ্যভাগে আমি একটা খেলা উদ্ভাবন করি।
সেটা এরকম, বন্ধুদের একেকজন মূর্ত বা বিমূর্ত তিন বা ততোধিক বিষয় একত্র করে একটা ককটেল মতো তৈরি করবে, যেটা তার দৃষ্টিতে বেস্ট কম্বিনেশন। আমাদের জীবন তখন সিনেমা ও সঙ্গীতময়। ওই সময়টায় ভারতীয় ছবি দেখার সুযোগ ছিল না, ব্যক্তিগতভাবে আমি '৬৫ সালের যুদ্ধের আগে থ্রি-ফোরে থাকতে বাবা-মায়ের সঙ্গে কয়েকটি ভারতীয় ছবি দেখেছিলাম। আর ওই সময়টাতেই ছোট চাচা ঢাকায় এলে শাপমোচন দেখতে গিয়ে আমাকেও সঙ্গে নিয়েছিলেন। আমরা আসলে দেখতাম ঢাকা, পশ্চিম পাকিস্তান ও দেশের বাইরের, মূলত হলিউডের ছবি।  
যাকগে, আমরা সেই বেস্ট কম্বিনেশনের খেলায় আসি। সব হুবহু মনে নেই, তবে কাছাকাছি হবে। একজন বললো: রহমান নায়ক, নায়িকা শবনম, সুরকার রবীন ঘোষ ও কণ্ঠ বশির আহমেদ।

আরেকজনের কম্বিনেশন: মোহাম্মদ আলী নায়ক, জেবা নায়িকা, কণ্ঠ মেহেদি হাসান, কমেডিয়ান লেহেরি। তৃতীয়জনের চয়েস: গীতিকার গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার, সুরকার সলিল চৌধুরী ও কণ্ঠ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আমাদের মধ্যে পারভেজ ছিলো ইংরেজি ছবির পোকা। সোফিয়া লরেনের 'টু উইমেন' ও 'ইয়েসটারডে টুডে টুমরো' সিনেমা দুটি দেখে তার সে কী উচ্ছ্বাস! তো পারভেজের ককটেলটা ছিলো: নায়িকা সোফিয়া লরেন, নায়ক ভ্যালন ও পরিচালক ভিটারিও ডি সিকা। এমন আরও অনেক ককটেল বানানো হয়েছিলো।  
আমার টার্নে বললাম: বৃষ্টির দিন, খিচুড়ি, হাঁসের মাংস ও রবীন্দ্রসঙ্গীত। সবাই আমাকেই ফার্স্ট বানিয়ে দিলো।  
বর্তমান বাংলাদেশে বেস্ট কম্বিনেশন করতে হলে আমি বলবো: গণতন্ত্র, সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ।

news24bd.tv/ডিডি